Description
১৯১৪ সালে কানাডা থেকে প্রত্যাগত কোমাগাটামারু জাহাজের যাত্রীদের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে বজবজে যে সংঘর্ষ হয়, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তা এক উল্লেখযােগ্য ঘটনা। বাবা গুরদিৎ সিং নামে
অমৃতসরের এক শিখ উদ্যোক্তা ভারত এবং দূরপ্রাচ্যে ছড়িয়ে থাকা কানাডা গমনেচ্ছু ভারতবাসীদের যাত্রার জন্য কোমাগাটামারু নামে এক জাপানি জাহাজ ভাড়া করেন। অন্যদিকে কানাডা সরকার এই যাত্রীদের ভ্যাঙ্কুভারে অবতরণ করতে দেননি। সেই সময়কার বিদেশি সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী তাদের রুখে দেওয়া হয় এবং ভারতে প্রত্যাগমনে বাধ্য করা হয়। এর কারণ ছিল ক্যালিফোর্নিয়াতে লালা হরদয়ালের নেতৃত্বে গদর পার্টির উদ্ভব। তাদের প্রভাব খর্ব করার জন্য ব্রিটিশ সরকার কানাডা সরকারকে প্রভাবিত করে। বাবা গুরদিৎ সিং এবং তাঁর অনুগামীরা কোমাগাটামারুতে চড়েই ভারতের দিকে রওনা হন।এঁরা ছিলেন মূলত শিখ কৃষিজীবী সম্প্রদায়। ভাগ্যান্বেষণে গুরদিতের আহ্বানে কানাডা যাত্রা করেন। তাঁরা সেই অর্থে স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন না। কিন্তু জাহাজটি বজবজে পৌছলে তারা অবতরণ করেন। ব্রিটিশ সরকারের ট্রেন তাঁদের পাঞ্জাব নিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু তারা সেই আইন অমান্য করে পদব্রজে এদিক ওদিক চলে যেতে থাকেন। তখন ব্রিটিশ সেনারা গুলি চালায় এবং ২০ থেকে ৪০ জন নিহত হন। বাবা গুরদিৎ সিং ২৮ জন সঙ্গী
সমেত পালিয়ে যান। বাকিদের ট্রেনে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়। এইভাবে তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন এবং শহীদও হন।লেখক ঐতিহাসিক দলিলপত্র সহযােগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। বজবজের অধিবাসী এবং আঞ্চলিক ইতিহাসের একনিষ্ঠ সেবক গণেশ ঘােষ যেভাবে বজবজে এই সংঘর্ষের খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন, তার অনেকটাই আমাদের অজানা ছিল। যাত্রীদের প্রভাবে পাঞ্জাবে বিক্ষোভের সূচনা হয় এবং এক চরমপন্থী আন্দোলন গড়ে ওঠে। গণেশ ঘােষ অনেক পরিশ্রম সহকারে নানা সরকারি দলিলপত্র এবং পত্রিকা ঘেঁটে যাত্রীদের প্রত্যেকের নাম ঠিকানা এবং পরিচয় সংগ্রহ করেছেন।
Be the first to review “বাংলার জালিয়ানওয়ালাবাগ বজবজের কোমাগাটামারু -গণেশ ঘোষ”
You must be logged in to post a comment.