বৈদিক সাহিত্যের পরিধির মধ্যে সংহিতা থেকে সূত্র সাহিত্য পর্যন্ত বিধৃত,অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব দ্বাদশ শতক থেকে খ্রিস্টীয় পঞ্চম-ষষ্ঠ শতক পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বছরে বেদকেন্দ্রিক যে-সাহিত্য রচিত হয়েছিল তার, ইতিহাস। এ-সাহিত্যের প্রথম পর্যায়ে, বহু-দেবতার উদ্দেশে রচিত স্তব, প্রার্থনা যেমন আছে, তেমনি আছে সমাজজীবনের নানা গৌণ চিত্র-ও কিছু অধ্যাত্মবিষয়ক রচনাও। পরবর্তী ব্রাহ্মসাহিত্যে যজ্ঞর প্রণালী,উপযোগিতা, পুরোহিতের ভূমিকা ও দক্ষিণা সম্বন্ধে নির্দেশ এবং তৎসংশ্লিষ্ট কিছু আখ্যায়িকাও আছে। তার পরে কর্মকাণ্ড অর্থাৎ যজ্ঞকর্ম ও যজ্ঞতত্ত্ব অনেকটা গৌণ,রুপকা়য়িত আকারে দেখা দেয় আরণ্যকসাহিত্যে, যার পূর্ণ পরিণতি উপনিষদে। এদুটিকে জ্ঞানকাণ্ড বলে।এই গ্রন্থে বেদকে তার আর্থসামাজিক পরিবেশের মধ্যে রেখে বিচার করার চেষ্টা রয়েছে। বেদ লিখিত রচনা নয়, কথ্য ও শ্রৌত রচনা, ফলে লিখিত রচনা থেকে এর প্রকৃতি ও উপাদান কতকটা ভিন্ন। পরিশেষে, বৈদিক সাহিত্য যে শুধু, ধর্মগ্রন্থই নয়, সাহিত্যও বটে, এই কথাটি স্মরণে রেখে যথাসম্ভব এর সাহিত্যিক মূল্যায়নেরও প্রয়াস আছে এ গ্রন্থে।




