নিয়তিবাদঃ উদ্ভব ও বিকাশ -সুকুমারী ভট্টাচার্য

Click on the button below to contact us on WhatsApp, and buy.

BUY ON WHATSAPP

HOW TO PAY

You can pay send your payment at any of the following UPI IDs, or scan the QR code, or send the payment directly to our bank:

INDIA POST PAYMENTS BANK

India Post

(IPPB) UPI ID= 9563646472@postbank
Malay De Sarkar
A/C No: 100005759940
IFSC: IPOS0000001
Mobile: 9563646472
STATE BANK OF INDIA

India Post

(SBI) UPI ID= 9563646472@sbi
Malay De Sarkar
A/C No: 32004843406
IFSC: SBIN0000162
Mobile: 9563646472

নিয়তি অর্থাৎ অদৃষ্ট, অজ্ঞেয় ও অনিয়ন্ত্ৰণীয় এক শক্তি যা মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে, এটি সারা পৃথিবীতেই পরিব্যাপ্ত বহু প্রাচীন একটি বিশ্বাস। ক্লস্টারমাইয়ার তার প্রবন্ধে [একোলজিক্যাল ডিমেশন্স অব এশ্যেস্ট ইণ্ডিয়ান্ থট] বলেন, ঐ (বৈদিক) যুগের পরিস্থিতিতে জীবনযাত্রা কায়ক্লেশে নির্বাহিত হত : টিকে থাকাই অনিশ্চিত ছিল এবং দুর্ভিক্ষ,রােগ, শত্রু ও শ্বাপদের দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা প্রবল ছিল। যে-শক্তিসূত্রে দেবলােক মনুষ্যলােকের সঙ্গে যুক্ত, প্রত্যেক আপতিক দুর্ঘটনা যেন সেই সূত্র ছিন্ন হয়ে যাওয়ার জন্যেই ঘটেছে এমন মনে করা হত। [জশ সম্পাদিত, ১৯৮৪, পৃ ৩৫১] ভারতবর্ষের প্রথম রচিত গ্রন্থ ‘প্রাচীন বৈদিক সাহিত্য অর্থাৎ সংহিতা ও ব্রাহ্মণগুলিতে নিয়তির কোনাে চিহ্নই নেই। অর্ধ সহস্রাব্দ পরে বিপৎসংকুল ছিল যতটা তার চেয়ে বহু বেশিগুণ বিপৎসংকুল ছিল তখনকার, অর্থাৎ বৈদিক যুগের জীবনের পরিবেশ; কিন্তু এই সাহিত্যের মূলসুরটি ছিলঃ দেবতারা স্বর্গ থেকে মানবজীবন নিয়ন্ত্রণ করেন এবং প্রয়ােজনে মানুষ সর্বদাই যজ্ঞে স্তোত্রপাঠ করে, সুস্বাদ হব্য ও পানীয় দিয়ে তাদের তুষ্টিবিধান করতে পারত। সাধারণভাবে দেবতারা মানুষের শুভার্থী এবং যতদিন সম্ভব এই পৃথিবীতেই থেকে সুদীর্ঘ জীবন যাপন করাই মানুষের পক্ষে বাঞ্ছনীয়;প্রকৃতি সুদৃশ্য, সদয় এবং জীবন আনন্দময়। ধীরে ধীরে, কিন্তু নিশিচতভাবেই কৃষিতে প্রাচুর্য‌ দেখা দিলে, পশুপালের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটলে, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে, আর্যরা আসার সঙ্গে যা বিচ্ছিন্ন হয়েছিল সেই নৌবাণিজ্য এবং তার দ্বারা গ্রীস ও রােমের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে,সম্পদের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটল। ‘(অত্রাঞ্জিখেরার) পুরাে বসতিপুঞ্জে দেখা যায় ‘চিত্রিত ধূসর পাত্রের সংস্কৃতিতে সেখানে
লােহা ব্যবহারের কৌশল গােড়া থেকেই ছিল। লােহার খনি থেকে ধাতু উৎখনন বেশ প্রচুর
পরিমাণেই হত, যাতে প্রচুর লােহার যন্ত্রপাতি তৈরি করার সুবিধা ছিল। অতএব উষ্ণমণ্ডলের
উদ্ভিদ অরণ্য উৎপাটন করে, তারা জমিকে প্রসারিত করে কৃষির কাজে লাগাতে পেরেছিল
এবং ধান, বাজরা, যব ও রবিশস্যের সঙ্গে গমেরও চাষ করত। বহির্বাণিজ্যেও তারা লিপ্ত ছিল,না হলে অত পরিমাণে ধাতু ও সস্তা মণির পুঁতি সংগ্রহ করতে পারত না। এই সব সিদ্ধান্ত
থেকে এই ধারণাই দৃঢ় হয় যে, এই সময়টিতে বেদের শেষের পর্যায়ের সংস্কৃতিই প্রতিফলিত।
[ঘােষ সম্পাদিত, অ্যান্ এনসাইক্লোপিডিয়া অব্ ইণ্ডিয়ান আর্কেওলজি, পৃ ২৬] এই প্রাচুর্য
সমাজে শ্রেণীবিভেদকে দৃঢ়তর করে এবং আরও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে,সমাজের একটি ক্ষুদ্র অংশ অন্য বৃহত্তর শ্রমজীবী অংশের তুলনায় কত বেশি প্রাচুর্য ও ভােগ্য উপকরণ পেত।এর একটা ফল হল, গােষ্ঠী ও কৌম-গত জীবন ভেঙে গেল, একান্নবর্তী বৃহৎ পরিবার
(কুল) সমাজের নিম্নতম একক হিসেবে দেখা দিল। আর্যরা যখন প্রাগার্যদের পরাস্ত করে
আর্যাবর্তের উত্তর পশ্চিম ভাগ থেকে দূরে সরিয়ে দিল, তখন পরাজিত জনগােষ্ঠীর অনেককেই
দাস ও ক্রীতদাস হিসেবে আর্য সমাজের বেশি শ্রমসাধ্য কাজে নিয়ােগ করল। এদের শ্রমের বিনিময়ে আর্য সমাজের উপর তলায় একটি অবসরভোগী উদ্বৃত্তভোগী শ্রেণী তৈরি হল।

Scroll to Top