প্রসঙ্গ অজিতেশ

Click on the button below to contact us on WhatsApp, and buy.

BUY ON WHATSAPP

HOW TO PAY

You can pay send your payment at any of the following UPI IDs, or scan the QR code, or send the payment directly to our bank:

INDIA POST PAYMENTS BANK

India Post

(IPPB) UPI ID= 9563646472@postbank
Malay De Sarkar
A/C No: 100005759940
IFSC: IPOS0000001
Mobile: 9563646472
STATE BANK OF INDIA

India Post

(SBI) UPI ID= 9563646472@sbi
Malay De Sarkar
A/C No: 32004843406
IFSC: SBIN0000162
Mobile: 9563646472

হেমাঙ্গ বিশ্বাসের স্মৃতিচারণায় নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়:- চল্লিশ দশকের গােড়ার কথা। আমরা তখন সারা ভারতব্যাপী গণসংস্কৃতি আন্দোলনের অংশীদার। ১৯৪৩-এ আই, পি, টি, এ-র শুরু।গণনাট্য আন্দোলন ও গণসংস্কৃতি আন্দোলনে আমরা একসূত্রে গাঁথা।বিভিন্ন স্থান থেকে সেসময় বহু শিল্পী বেরিয়ে এসেছেন। দমদমের এক ভদ্রলােক আই, পি, টি, এ-র সভ্য তিনি আমাকে অজিতেশের কথা বলেছিলেন। অজিতেশ তখন আই, পি, টি, এ এবং কমিউনিষ্ট পার্টিতে যােগ দিয়েছে। গণনাট্য ও গণসংস্কৃতির কাজে সে নিজেকে নিয়ােজিত করেছে এবং পার্টির কালচারাল ফর্ম সম্পর্কে খুবই ভাবনা চিন্তা করছে।ওর সঙ্গে দেখা হলে সেসব বিষয়েই আলােচনা হত। ১৯৬০-৬১ সালে পশ্চিমবঙ্গ গণনাট্য সম্মেলন বা ঐ জাতীয় একটাঅনুষ্ঠান হয়েছিল–সঠিক মনে পড়ছে না। সেখানে অজিতেশ তার নিজের লেখা একটা নাটক করে– ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ। একজন ফাদারের ভূমিকায় সে খুব ভাল অভিনয় করেছিল। সেখানে আরেকদিন শচীন সেনগুপ্তের একটা নাটক, নাম সম্ভবতঃ ‘কালােটাকা’ তাতে অজিতেশ প্রধান ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করেছিল। সে-ই নাটকটাকে টেনে নিয়ে গেল। দর্শকরা তখনই বলেছিলেন, ‘দারুণ অভিনেতা। এমন অভিনয় ছাড়া নাটকটা টিকতই না।নাটকের বিষয়ে কারও আদেশ বা ফরমাস সে পছন্দ করত না। ওআই. পি. টি. এ ছেড়ে দেবার পরে—আমার ইচ্ছা ছিল তার পরিণতিটা
জানব। কি তার চিন্তাধারা ? সেটা আর জানা হয়নি। আস্তে আস্তে সে ভাল নাটক করার দিকে চলে গেল। এ বিষয়েও আমার কিছু বক্তব্য ছিল।
– যা ওর সাথে মিলতনা। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে ওকে আমি শ্রদ্ধা করি সব সময়। আমি বিশ্বাস করি একজন শিল্পীর রাজনৈতিক চিন্তা এবং তার
শিল্পের চিন্তা মেলে না অনেক সময়।ওর অভিনয় আমার ভীষণ ভাল লাগত। একটা ক্ল্যাসিক কিছু করার দিকে মনটা তার খেলছিল।‘ব্রেখট-এর ‘তিনপয়সার পালা’ দেখেছি। তাতে অজিতেশের নিজস্ব কিছু ছিল এবং খুব এন্টারটেনিং নাটক করেছিল। আমার দুর্ভাগ্য যে ভালমানুষ’ দেখিনি। চেখভের নামকরা নাটক ‘চেরীঅৰ্চার্ড’– ‘মঞ্জরী
আমের মঞ্জরী’—মঞ্চের কারসাজী না করে মঞ্চস্থ করে অজিতেশ।নাটকের দ্বন্দ্ব ও কাব্যিক দিক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। যদিও গত শতাব্দীর রাশিয়ার নাটক তার নিজস্ব ভাবাদর্শে সে রূপান্তরিত করেছিল।‘পাপপুণ্য’ নাটকে ওর অভিনয় হয়েছিল অসাধারণ। তথাপি আমার সাধারণ অভিজ্ঞতা, নাটকটা দেখার পর মনটা কেমন কুঁকড়ে যায় ক্ষয়,চতুর্দিকে ক্ষয়–ক্ষয়ের মধ্যে নাটকটা শেষ হয়। নাটকটা আমার ভাল লাগেনি। অভিনয়ের কথা অবশ্যই আলাদা।অজিতেশ বহু নাটকে গান লিখেছে ও সুর দিয়েছে। আমি গানের জগতের লােক হয়েও সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছিনা। এ জন্যই যে,সেগুলাে সব স্মরণে নেই।পাপপুণ্যের শেষ প্রদর্শনীর দিনই ওর সাথে শেষ দেখা।নাটকটা নিয়ে আলােচনার জন্য ও নিজেই আমার বাড়ী আসবে বলল। কিন্তু তা
আর হলনা।ওর কাছে কিছু জানার ছিল। যাত্রার অভিজ্ঞতা, ‘কালচারাল মুভমেন্ট অ্যাজ এ হােল’ এবং আমাদের রাজনৈতিক চিন্তা–এটার দ্বন্দ্ব চলছিল।এখন সে কি ভাবছে? তার সর্বশেষ মতটা কি? নাট্য আন্দোলন সম্পর্কে যে বিভিন্ন রকম স্কুল অফ ড্রামা, থার্ড থিয়েটার ইত্যাদি—সেগুলি সম্পর্কে জানার ছিল। সে সুযােগ আর পেলাম না।’হাটে বাজারে’ ছবিতে অভিনয় করে খুব নাম হয়েছিল ওর। কিন্তু গ্ল্যামার নিয়ে সে চলেনি। ওর কাছে ছােট, বড়, নামী-অনামী সবার ছিল অবারিত দ্বার। নতুন শিল্পীদের দিয়ে কী নিপুণ অভিনয় করাবার ক্ষমতা ছিল ওর ! ‘পাপপুণ্য’-তেই তাে দেখলাম নাটক পরিচালনা, অভিনয়, মঞ্চ উপস্থাপনা, নতুন অভিনেতা অভিনেত্রী তৈরি, আবহগীতি রচনা –এত
গুণের সমন্বয় যাদের মধ্যে সেই শম্ভু মিত্র, উৎপল দত্ত ও অজিতেশের মধ্যে অজিতেশই কনিষ্ঠতম। ওকে হারানােটা যে কত বড় ক্ষতি তা কল্পনাতীত।
প্রতিভা অনেকের মধ্যেই থাকে এবং এক একটা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সেই সব প্রতিভাবানরা বেরিয়ে আসে। তেমনি একটি প্রতিভা অজিতেশের এই হঠাৎ চলে যাওয়া বাংলা নাট্য আন্দোলনের এক অপরিসীম ক্ষতি।

Scroll to Top