‘দুর্বোধ্যতা’ কমলকুমারের সাহিত্য সম্পর্কে একটা বড় অভিযােগ, স্তুতি ও বন্দনার পাশাপাশি এই অভিযােগ বরাবরই ছিল, আজও আছে। কমলভক্ত লেখকদের কারও কারও মন্তব্যও বিতর্কিত লেখকটি সম্পর্কে পাঠকের দৃষ্টি স্বচ্ছ করার বদলে তাকে আরও ঘােলাটে করেছে। চল্লিশের, পঞ্চাশের প্রগতি আন্দোলন, তার জোয়ার লেখকের সামাজিক দায়বদ্ধতার ব্যাপারটিকে পর্বত প্রমাণ করে তােলে এবং
সাহিত্যের আঙ্গিক সম্পর্কে নিত্য নতুন ভাবনা ও তা প্রকাশের, চর্চার ব্যাপারটি এই ডামাডােলে মার খাচ্ছিল। তরুণ কবিদের এটা বিশেষ মনঃপূত হয়নি। কৃত্তিবাসী ক্ষোভের প্রধান সুরই ছিল নিজস্ব, নতুন ঢঙে আত্মপ্রকাশের ইচ্ছে। প্রগতিপন্থীদের বিরুদ্ধে শুধু নয় রবীন্দ্র অনুসারী মার্জিত সাহিত্য সম্পর্কেও তরুণদের তেমন অনুরাগ ছিল না। কমলকুমারের ‘অন্তর্জলী যাত্রা’ তাদের কাছে নিয়ে এল সম্পূর্ণ নতুন এক
শিল্প অভিজ্ঞতা। আড্ডায়, ছােট কাগজে উচ্ছ্বাসের বন্যা বয়ে গেল। একটি নমুনা পেশ
করা যাক।১৯৬২ সালে প্রকাশিত কৃত্তিবাস’ পত্রিকার একটি সংখ্যায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
লিখলেন, “কমলকুমার মজুমদারের অন্তর্জলী যাত্রা এ বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতার বই এবং উপন্যাস। এবং সামাজিক নিবন্ধ। এবং যা কিছু।” তরুণ কবির এই বিবৃতি উচ্ছাসপূর্ণ নিশ্চয়ই কিন্তু এই বিবৃতির মধ্যে কবিতা-উপন্যাস-নিবন্ধ সাহিত্য রচনার এই তিনটি রূপকে যে তিনি এক নিশ্বাসে উচ্চারণ করলেন অন্তর্জলী যাত্রা প্রসঙ্গে
তার সঙ্গত কারণ ছিল। ইউরােপীয় রীতিতেই বাংলা উপন্যাস এতাবৎ লেখা হয়েছে,কমলকুমার প্রথম ঘুরে দাঁড়ালেন।আখ্যান রচনার দেশজ রীতিকে অবলম্বন করলেন তিনি। প্রাচীন বাংলা কাব্যই সেই আখ্যানের ধাত্রী। গদ্যে রচিত অন্তর্জলী যাত্রা কাব্যধর্মকে যতটা পেরেছে আত্মসাৎ করেছে।সেইসঙ্গে আছে সমাজ চিত্রণের, বিশ্লেষণের,শাস্ত্র, ন্যায় পুরাণ ঘেটে এক ভিন্ন প্রকল্প রচনার প্রয়াস।কমলকুমার মজুমদারের সাহিত্য সম্পর্কে যথেষ্ট অবহিত নন কিন্তু এই কাল্ট-ফিগারটিকে ঘিরে অজস্র গল্প বলতে পারেন কলকাতায় এমন ব্যক্তি নেহাত বিরল নয়। আজও যত কথা হয় কমলকুমারের টিপ্পনী, রসিকতা ও উদ্ভট আচরণ নিয়ে, সেই তুলনায় তার সাহিত্য বিষয়ে আলােচনা যথেষ্টই কম।ভাষা,শৈলী,উপস্থাপনারীতিতে সাহিত্যে যে অণু-বিশ্ব তিনি রচনা করেন তা বিস্ময়কর। যে কোনও ভাষা এ ধরনের সাহিত্য-সম্ভারের জন্য গর্বিত বােধ করবে।আখ্যান রীতি সম্পর্কে নতুন চিন্তা এবং কল্পনা তাে ছিলই— বাণী জুগিয়েছেন, ভেঙেছেন শতাব্দী প্রাচীন স্তব্ধতা। গল্পগুজব, অতিশয়ােক্তি,অর্থহীন স্তুতি ও মাত্রাহীন নিন্দার আবর্জনা সরিয়ে লেখক কমলকুমারের ছবিটি স্পষ্ট করতে চাওয়া এবং বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তার স্থানাঙ্ক নির্ণয়ের একটা চেষ্টা করা হয়েছে এই বইটিতে।সেই সূত্রেই এসেছে বিস্ময়কর এই লেখকের মানস পরিমণ্ডল, তার লেখার প্রেক্ষিত ও পিছুটানের ইতিহাস।
কমলকুমার, কলকাতা:পিছুটানের ইতিহাস -রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায়
Click on the button below to contact us on WhatsApp, and buy.
HOW TO PAY
You can pay send your payment at any of the following UPI IDs, or scan the QR code, or send the payment directly to our bank:
INDIA POST PAYMENTS BANK
(IPPB) UPI ID= 9563646472@postbank
Malay De Sarkar
A/C No: 100005759940
IFSC: IPOS0000001
Mobile: 9563646472
STATE BANK OF INDIA
(SBI) UPI ID= 9563646472@sbi
Malay De Sarkar
A/C No: 32004843406
IFSC: SBIN0000162
Mobile: 9563646472