শিবানন্দ-স্মৃতিসংগ্রহ দ্বিতীয় খন্ড -স্বামী অপূর্বানন্দ সংকলিত

Call / WhatsApp : +91 9563646472

To purchase / enquire about the book, send a WhatsApp message or call between 11 AM and 11 PM.

Description

এই দ্বিতীয় খণ্ডের বর্তমান সংস্করণে শ্রীরামকৃষ্ণ সঙ্ঘের তিনজন প্রবীণ সন্ন্যাসী স্বামী গম্ভীরানন্দ মহারাজ, স্বামী ভূতেশানন্দ মহারাজ ও স্বামী

শিবস্বরূপানন্দ মহারাজের প্রদত্ত তিনটি স্মৃতিকথা প্রকাশিত হয়েছে।এই ব‌ইতে শ্রী ভূপেশচন্দ্র দত্ত স্মৃতি কথায় লিখেছেন, ১৯২৫ খ্রীষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে প্রথম বেলুড় মঠে যাই ।তখন আমি স্কুলের ছাত্র। সুদুর সিলেট (আসাম) থেকে এক আত্মীয়ের সহায়তায় কলকাতায় আসি। উদ্দেশ্য—বেলুড় মঠ ও শ্রীরামকৃষ্ণদেবের অন্তরঙ্গ পার্ষদদের দর্শন লাভ করা।বাল্যকাল (৮/৯ বৎসর বয়স )থেকেই শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হই। শ্রীহট্টে শ্রীরামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে সর্বদাই যাতায়াত করতাম। আশ্রমের ছােটখাট কাজকর্মও কিছু করতাম এবং কাজের সঙ্গে
শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্ৰীশ্ৰী মা, স্বামিজী ও শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের সন্ন্যাসি-সন্তানদিগের পুণ্য
জীবনকাহিনীও আলােচিত হত। একে একে আশ্রমের অনেক কর্মীই বেলুড় মঠে এসে দীক্ষা-ও ব্রহ্মচর্যগ্রহণান্তে মিশনের কাজে যােগ দিতে লাগলেন।উক্ত পবিত্র পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত থাকায় আমার মনেও বেলুড় মঠে গিয়ে
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের পার্ষদগণের দর্শনলাভের বাসনা ক্রমেই তীব্র হতে লাগল।দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় ১৯২৫ খ্রীঃ এপ্রিল মাসে আমার কলকাতা আসার সুযােগ এল। সেই সময় পরমারাধ্য মহাপুরুষ স্বামী শিবানন্দ মহারাজ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ। আমার কলকাতা যাবার প্রকৃত উদ্দেশ্য পরিবারের সকলের কাছে গােপন রেখেছিলাম, কারণ তখন ছাত্রজীবনে কলকাতা গিয়ে বেলুড় মঠে দীক্ষাগ্রহণ কাহারো মনঃপুত ছিল না।কলকাতায় পৌঁছে পরদিন সকালে ৯/১০টার মধ্যে খাওয়া-দাওয়া সেরে ফেরী স্টীমারে বেলুড় মঠে পৌছুতে ১২টা বেজে গেল। এপ্রিল মাস। বেলা১২টার পর মঠ প্রায় নীরব। দক্ষিণের ফটক দিয়ে মঠে প্রবেশ করামাত্র আমার মন আনন্দে পূর্ণ হয়ে গেল। আমি মঠভূমি স্পর্শ করে প্রণাম করলাম।মনে পড়ল—এই সেই তীর্থ যেখানে স্বামী বিবেকানন্দ ‘আত্মারাম’কে মাথায় করে এনে স্থাপন করেছেন।স্বামিজীর মন্দির দর্শন করে মঠবাড়ির দিকে অগ্রসর হলাম। মঠপ্রাঙ্গণে প্রবেশের ফটকের সামনে আসতেই একজন সন্ন্যাসী পুরাতন ঠাকুরমন্দিরের একতলায় ভাড়ার ঘরের বারাণ্ডা থেকে উচ্চৈঃস্বরে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন-
“কোথা থেকে এসেছ ? খাওয়া-দাওয়া হয়েছে ?” আমি খাওয়া-দাওয়া সেরে এসেছি জানালাম। তিনি বললেন, বিকালে ৩টার পরে মহাপুরুষ মহারাজজীর দর্শন হবে। আমি আর অগ্রসর না হয়ে বর্তমানে যেখানে একটি নাগলিঙ্গম ফুলের গাছ আছে সেখানে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম করতে লাগলাম। বিশ্রাম করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানি না, হঠাৎ কারাে ডাক শুনে ঘুম
ভেঙ্গে গেল। দেখলাম একজন সাধু আমার ঘুম ভাঙ্গিয়েছেন ; তিনি ছিলেন ব্রহ্মচারী জ্ঞান মহারাজ (স্বামিজীর শিষ্য)। আমি গঙ্গার ঘাটে হাতমুখ ধুয়ে একতলায় গঙ্গার দিকের বেঞ্চে বসলাম। জ্ঞান মহারাজ পাশে বসে অনেক
জিজ্ঞাসাবাদ করতে লাগলেন। তিনি সিলেটের ভক্তদের খুব প্রশংসা করলেন।কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতা থেকে ৪/৫ জন ভক্ত পরমপূজ্যপাদ মহাপুরুষজীর দর্শনের জন্য উপস্থিত হলেন। যথাসময়ে খবর দিতেই আমরা সকলে উপরে
গেলাম। মহাপুরুষজী তার ঘরে দক্ষিণাস্য হয়ে একটি চেয়ারে আসীন ছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণের অন্তরঙ্গ পার্ষদের প্রথম দর্শনে আমি বিমুগ্ধ হলাম।মনে হল যেন স্বয়ং ‘শিবাবতার’ উপবিষ্ট রয়েছেন। একে একে ঘরে প্রবেশ করে প্রণামান্তে মেঝেতে বসে পড়লাম। উপস্থিত সকলের মধ্যে আমি বয়:কনিষ্ঠ।

Be the first to review “শিবানন্দ-স্মৃতিসংগ্রহ দ্বিতীয় খন্ড -স্বামী অপূর্বানন্দ সংকলিত”