Description
তিব্বতী পঞ্জিকা মতে বৃক্ষ শূকর বর্ষের পঞ্চম মাসের পঞ্চম দিনে—অর্থাৎ ১৯৩৫ খৃষ্টাব্দে আমার জন্ম হয়েছিল তিব্বতের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি।ছােট্ট গ্রাম তাকৃসিরে। দোখাম্ জেলার অন্তর্ভুক্ত এই তাসির, এবং বিশেষ অর্থব্যঞ্জক এই দোখাম্ নামটিও : যথা দো মানে একটি উপত্যকার নিম্নদেশ যেখানে এসে উপত্যকাটি মিশেছে সমতল ভূমির সঙ্গে, আর খাম হচ্ছে তিব্বতের পূর্ব প্রান্তের সেই অংশটি যেখানে বাস করে একটি বিশেষ শ্রেণীর তিব্বতীরা—যাদ্রের নাম খমপা। অর্থাৎ দোখাম হচ্ছে তিব্বতের সেই অংশটি যেখানে আমাদের পর্বতমালা ক্রমশঃ নেমে গিয়েছে পূর্ব প্রান্তের
সমতল ভূমিতে, চীনের দিকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ন’ হাজার ফিট উচ্চে অবস্থিত এই তাকসির।
অতি মনােরম এই দেশ। একটি ছােট্ট মালভূমিতে অবস্থিত ছিল আমাদের গ্রামটি, এবং এর চারিদিক ঘিরে ছিল গম আর বালির উর্বর শস্য
ক্ষেত্র; আর মালভূমিটিকে বেষ্টন করে রেখেছিল ঘন, গাঢ় সবুজ তৃণাচ্ছাদিত গিরিশ্রণী। গ্রামের দক্ষিণে ছিল একটি পর্বত, যেটি অন্য পর্বতগুলি অপেক্ষা উচু।এটির নাম আমি-চিরি, কিন্তু স্থানীয় লােকেরা এটিকে বলতাে-গগনভেদী পর্বত, এবং দেশরক্ষী দেবতার বাসস্থান বলে মনে করতো এটিকে। এটির ঢালুদেশের নিম্নভাগ অরণ্য আবৃত ; তদূর্ধ্বের অংশটি প্রচুর তৃণসমৃদ্ধ ; আরও উচ্চে পর্বতগাত্রটি সম্পূর্ণ নগ্ন, এবং শিখরদেশে লেগে থাকতাে তুষারের প্রলেপ যা দ্রবীভূত হতো না কোন দিনই। পাহাড়ের উত্তরাংশে চিরহরিৎ গুল্মরাজি আর ঝাউ, পিচ, কুল, আখরােট বৃক্ষ, এবং বহু প্রকারের বৈঁচিফল আর সুগন্ধি ফুলের গাছ।
Be the first to review “স্বদেশ ও স্বজন,পুণ্যাত্মা দালাই লামার আত্মজীবনী -অনুবাদ:অচ্যুত চট্টোপাধ্যায়”
You must be logged in to post a comment.