Description
গ্যোয়েটের ভাষায়, ‘মলিয়ের এক এত বিরাট প্রতিভা যে তার লেখা,পড়লে প্রত্যেকবার নতুন করেআশ্চর্য হতে হয়।’ তাঁর জীবৎকাল থেকেই মলিয়ের(১৬২২-১৬৭৩) ফ্রান্সে এক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হন।বিংশ শতাব্দীতেও ফ্রান্সের পেশাদারি ও অপেশাদারি মঞ্চে,চলচ্চিত্র ও দূরদর্শনে তার ধারাবাহিক সাফল্য দেখে মনে হয় তিন শতাধিক বছর পরেও তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন।সপ্তদশ শতকের ফরাসি সমাজকে তিনি গভীরভাবে চিনেছিলেন।তাঁর নাটকগুলি যেন নানা ধরনের চরিত্রের এক বিচিত্র গ্যালারি, যা কমেডির হাসি, মজা ও আনন্দকে অক্ষুন্ন রেখেও ট্র্যাজিক অভিজ্ঞতাকে প্রকাশ করতে পারে।মানবিক কাপট্যের প্রতি এক বিরল অন্তদৃষ্টির পাশাপাশি শুভবুদ্ধি ও সুস্থতার প্রতি আস্থাতাঁর রসসৃষ্টির বৈশিষ্ট্য ।জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অমৃতলাল বসু থেকে শুরু করে অনেকেই মলিয়ের অনুবাদ করেছেন, মাইকেল মধুসূদন তাঁর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ-কন্যা মাধুরীলতার জন্য মলিয়েরের নাটক যােগাড় করার চেষ্টা করেছেন।আমরা এই মহান ফরাসি রসস্রষ্টাকে বাঙালি পাঠকের কাছে নতুন করে উপস্থিত করছি।
যখন ট্র্যাজেডিকেই নাটকের একমাত্র স্বীকৃত ধারা বলে গণ্য করা হত, তখন দুই বিখ্যাত সমসাময়িক ট্র্যাজেডি-রচয়িতা কর্ণেই ও রাসিনের চেয়ে এই রসস্রষ্টার গরিমা কিছুমাত্র কম ছিল না। বাকি দুজনের চেয়ে আজ তিনি অনেক বেশি পঠিত, বিংশ শতাব্দীতেও ফ্রান্সের পেশাদারী ও অপেশাদারী মঞ্চে,চলচ্চিত্র ও দূরদর্শনে মলিয়েরের ধারাবাহিক সাফল্য দেখে মনে হয় তিনশতাধিক বছর পরেও তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন।১৬২২ সালে (অর্থাৎ শেপীয়রের মৃত্যুর ছবছর পর) প্যারিসে জাঁ- বাতিস্ত পোকল্যাঁর জন্ম। তার বাবা ছিলেন এক সম্পন্ন পর্দা-ব্যবসায়ী, ১৬৩১ সাল থেকে তিনি খােদ রাজসভার পর্দা তৈরির দায়িত্ব পান। এদিকে দশ বছর বয়সে মলিয়ের তাঁর মাকে হারান। প্রাথমিক শিক্ষার পর ১৬৪০ নাগাদ তিনি আইন পড়তে শুরু করেন ; একইসঙ্গে দার্শনিক গাসেনদির শিষ্য হন, সেখানে তাঁর সুহৃদ ছিলেন স্বয়ং সিরানাে দ্য বেরজ্যরাক। ফলে তাঁর ওপর গােড়া থেকেই মুক্ত চিন্তার প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।১৬৪৩-য়ে নজন অভিনেতা নিয়ে জাঁ-বাতিস্ত পােকল্যাঁ লিল্যুস্ত-তেয়াত্র নামে একটি নাটকের দল গড়েন। নিজের সামাজিক অবস্থানকে ভুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ছদ্মনাম নেন ‘মলিয়ে’র। অবশ্য প্রবল পেশাগত বিরােধিতার জন্য ১৬৪৫ সালেই দল ভেঙে যায়, ধার শােধ করতে না
পারার অপরাধে মলিয়ের কারারুদ্ধ হন। কিন্তু তিনি দমবার পাত্র ছিলেন না। আবার দল গড়ে এবার নিজেই নাটক লিখতে শুরু করেন।তেরাে বছর গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ১৬৫৮ সালে প্যারিসে ফিরে এসে স্বয়ং রাজভ্রাতার পৃষ্ঠপােষকতায় রাজসভার সামনে নাটক মঞ্চস্থ করেন।বেআইনী প্রকাশনা আটকাতে তাঁর মঞ্চ-সফল নাটক Précieuses ridicules পুস্তকাকারে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেন। তার ওপর পেশাদারী ও ধর্মীয় আক্রমণ সত্ত্বেও রাজা চতুর্দশ লুই মলিয়েরকে সমাদর করতে দ্বিধা করেননি। ১৬৫৫ সালে মলিয়েরের দল রাজার দলে পরিণত হয়।
Be the first to review “জর্জ দাঁদ্যাঁ ও অন্যান্য -মলিয়ের”
You must be logged in to post a comment.