ঢাকার কাহিনী বলতে গিয়ে লেখক আমাদের যে ইতিহাস উপহার দিয়েছেন সেখানে চিরাচরিত দৃষ্টি ভঙ্গিই প্রাধান্য পেযেছে । আমাদের গৌরবময় ইতিহাসে সত্য উপলব্ধিতে সাহায্য করা লেখকের উদ্দেশ্য বলে দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকায় লেখক উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সেই সত্য একাধারে ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহে সাহায্যকরে ঢাকাবাসী যারা প্রাণ দিয়েছেন ফাসিতে কিংবা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের পক্ষে এবং তাদের নিগৃহিতকারীদের এ-দেশীয় সহযােগীদের সাথে একাসনে স্থান
পেয়েছে বইখানিতে। এই গ্রন্থের এই মৌলিক দুর্বলতা বাদ দিলে কিভাবে ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাজপথের নামকরণ হয়েছে। এর প্রাচীন নিদর্শন ও ঐতিহাসিক তথ্যাবলীর সাথে পাঠকের পরিচয় নিবিড় হবে। ইতিহাস শুধু নবাব বাদশাহ কিংবা
এদেশে ইংরেজ আধিপত্যের বর্ষপঞ্জী নয়। ঝড়ের মধ্যে পড়া পথিকের উর্ধশ্বাস দৌড়টাই শুধু সত্য নয়, সত্য তার লক্ষ্য যেখানে বিপুল জীবন প্রবাহ চলছে ।আমাদের ইতিহাসের এই বাইরের দিকটা অন্তরের সত্যকে বারবার আড়াল করেছে। তাই গবেষকদের গ্রন্থে রান্নার বর্ণনাটা মেলে, খাদ্যের স্বাদ সেখানে অনুপস্থিত। নাজির হােসেন সাহেব তার লেখার গুণে সেই স্বাদের আয়ােজন থেকে পাঠকদের বঞ্চিত করেননি।বাহান্ন গলি তেপান্ন বাজার ঢাকা বাংলাদেশের ইতিহাসে নানা কারণে স্মরণীয় হয়ে আছে সেই মােগল যুগ থেকে। প্রকৃত পক্ষে আমাদের দেশে ইতিহাসের ডাঙ্গাটায় তখন থেকেই প্রাণের কলরব শােনা যেতে থাকে। কিংবদন্তির ঢাকা বইতে লেখক সেই কলরবকে আবেগ ও উপলব্ধির সীমানায় এনেছেন।লেখক যথাসাধ্য ঐতিহাসিক তথ্য উন্মোচনের প্রয়াস পেয়েছেন। বাংলা ভাষায়
ঢাকার ইতিহাস নামে দুখন্ডের একখানি গ্রন্থ রয়েছে। এছাড়াও ইংরেজী ও বাংলা আরও কিছু গবেষণা গ্রন্থ আছে। তার মধ্যে ডঃ দানীর ইংরেজীতে লিখিত “ঢাক”নানা কারণে মূল্যবান। বাংলা ভাষায় আমরা নাজির হোসেন সাহেবের বইয়ে ডি আর নবাবদের স্মৃতি বিজরিত ঢাকার তথ্যের চিত্রাগ্রাহী কাহিনী পেলাম । কৌতহলী পাঠক এই বই পড়ার পর ঢাকার প্রতিটি রাস্তা ও গলির আত্মকাহিনী শুনতে পাবেন পথ চলতে। কিন্তু সাধারণ মানুষের সুষুপ্তি ও দীর্ঘ বিশ্বাস এবং প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবময় কাহিনী অর্থাৎ সিপাহী বিদ্রোহের উল্লেখ এসেছে প্রসঙ্গক্রমে।বইয়ের উৎসর্গপত্রের সার্থকতা তাতে রক্ষিত হয়েছে বলে মনে হয় না। নবাব সলিমুল্লাহ ১৪ লাখ টাকা ঋণ হিন্দু মহাজনদের কাছ থেকে নিয়ে তাদের চক্রান্তের শিকার হয়েছেন, তাকে হয়রানী করার চেষ্টা হয়েছে এই সত্যের পাশাপাশি তাকে।ইংরেজ গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জন বৃটিশ স্বার্থে ব্যবহারের জন্য ১৬ লাখ টাকা অল্প সুদে ঋণ দিয়েছেন সেই তথ্যের উল্লেখ নেই। হিন্দু বা মুসলিমদের বৃটিশের সুবিচার কিংবা অবিচার পালাক্রমে যেভাবে চিত্রিত করা হয় তার পেছনের
নির্মম সত্য একটাই… তাহল বৃটিশের এই আচরণ বিশেষ কোন সম্প্রদায় প্রীতি বা কল্যানবােধ থেকে উৎসারিত নয়, সাম্রাজ্য শাসনের প্রয়ােজনেই সে একাজটি করেছে। এই সহজ সত্যের স্বীকৃতি বইটিতে কোথাও নেই। হিন্দু বা মুসলিমরা।সম্প্রদায় হিসাবে বাংলাদেশকে সুয়ােরানী বা দুয়ােরানী তা বঙ্গভঙ্গ বা বঙ্গভঙ্গ রদ দিয়ে বিচার বিবেচনাকালে আমরা ভুলে যাই যে, এই বৃটিশ শাসকরাই দক্ষিণ ভারতে মােপলা বিদ্রোহ অত্যন্ত নৃশংসভাবে দমন করেছে। ট্রেনের বন্ধ কামরায় ২২৬ জন বন্দী মােপলার মধ্যে ২৩ জন বাদে সকলেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিল। এছাড়া জেলে ও গুলীতে প্রাণ হারিয়েছে আরও অনেকে। মােপলাদের উপর ওখানকার জমিদার (যারা উচ্চ শ্রেণীর বর্ণহিন্দু) আর বৃটিশরাজ্যের যুক্ত রােষ আর অত্যাচার
প্রমাণ করে যেখানে যে সম্প্রদায় দ্বারা বৃটিশ সাম্রাজ্যের স্বার্থ নিরাপদ মনে হয়েছে।তাকেই আদরে বর্গী হিসাবে ঠোটে কিংবা বিপরীত ক্ষেত্রে অনাদরের ‘বর্গী’ হিসাবে পিঠে করে নিয়েছে। এই বৃটিশ সরকারই বাংলাদেশে কৃষক বিদ্রোহ, ফকির বিদ্রোহ।নির্মম হাতে দমন করেছে। লেখক স্বাধীনতাহীন অবস্থায় এদেশে হিন্দু মুসলমানের।
বিবাদে উভয় সম্প্রদায়ের উচ্চ শ্রেণীর ভূমিকা দেখেছেন। অবশ্যই একথা স্বীকার্য,শিক্ষাদীক্ষা আত্মচেতনা স্বাতন্ত্রবােধ যা আধুনিক ব্যক্তিসত্তার অন্যতম উপাদান সেক্ষেত্রে বিত্তশালী শ্রেণীর কারুর কারুর অবদানকে এজন্য খর্ব করে দেখা ঠিক নয়।
কিংবদন্তির ঢাকা – নাজির হোসেন
Click on the button below to contact us on WhatsApp, and buy.
HOW TO PAY
You can pay send your payment at any of the following UPI IDs, or scan the QR code, or send the payment directly to our bank:
INDIA POST PAYMENTS BANK
(IPPB) UPI ID= 9563646472@postbank
Malay De Sarkar
A/C No: 100005759940
IFSC: IPOS0000001
Mobile: 9563646472
STATE BANK OF INDIA
(SBI) UPI ID= 9563646472@sbi
Malay De Sarkar
A/C No: 32004843406
IFSC: SBIN0000162
Mobile: 9563646472