দু দন্ড ফোয়ারামাত্র কবিতার বইয়ের ভূমিকায় আগষ্ট- ২০১১তে কবি জয় গোস্বামী লিখেছেন –
আমার আগের কবিতার বই- ‘ফুলগাছে কী ধুলো’- প্রকাশিত হয় এবছর পয়লা বৈশাখে। এপ্রিলের পনেরো তারিখ ছিল সে দিন। তার ঠিক পরপরই, সতেরো এপ্রিল থেকে দোসরা মে-এর ভেতর লেখা হয়েছে বর্তমান বইয়ের প্রায় সব ক’টি কবিতা। এই বই লেখা হয়ে গেছে খবর পেয়ে ‘রোববার’ পত্রিকা এর চোদ্দোটি কবিতা নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে, বড়ো যত্নে আর ভালোবাসায়। ‘জয় চতুর্দশী’ শীর্ষক সেই সংখ্যাটিকেই আমি আমার গ্রন্থপ্রকাশ অনুষ্ঠান হিসেবে উদ্যাপন করেছিলাম মনে মনে- বই বেরোবার আগেই।আর বাইশে শ্রাবণ উপলক্ষে সংবাদ প্রতিদিনের ‘ছুটি’-তে প্রকাশিত হয় ‘কবিতা একাদশ’ নামে এই বইয়েরই এগারোটি কবিতা।এ বই থেকে আরও একটি কবিতাগুচ্ছ বেরিয়েছে সদ্যোজাত ‘শহর’ কাগজে। এবং এ বইয়ের দুটি কবিতাগুচ্ছ ছাপা হয়েছে ‘নব পত্রিকা’য়। এঁদের সকলের কাছে আমি ঋণী। ‘নবপত্রিকা’-র জন্য লেখা নিতে এসে পড়ত সৌরভ আর দেবজ্যোতি। নতুন কবিতা না-শুনে তারা উঠবেই না, এই জেদ ধরত। মেঝেতে বসা দুই নির্বাক শ্রোতা, বাইরে গ্রীষ্মের বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যার বাতাস, কখন অসময়ের বৃষ্টি তার ছাট-ঝাপটা নিয়ে পাড়ায় ঢুকল আবার চলেও গেল, সামনের গলি দিয়ে ঘটিগরম নিয়ে যাওয়া ক্যানিং-এর মথুর দাস-এর হাত-ঝুমঝুমির আওয়াজ, ঘরের মেঝে থেকে বারান্দার মাধবীলতার ডাল বেয়ে বেড়ালছানাদের ক্রমাগত ওঠানামা আর ছুটে বেড়ানো। এর মধ্যে কখন শেষ হয়ে আসত সেদিনের কবিতা-পাঠ। এ বই লেখার উপলক্ষে আমার ঘরে অন্তত গোটা দুয়েক পাঠ-অনুষ্ঠানও যে হয়ে গেছে দুটি শ্রোতা সম্বল করে-একথাও বলতে পারা যায়। ওই দুটো দিনে, সৌরভ আর দেবুকে শুনিয়ে দিয়েছিলাম পুরো বইটাই। সেও ছাপা হবার আগেই।সে বই এবার ছেপে বার করছেন আনন্দ পাবলিশার্স। আগের বইটি বেরিয়েছিল বৈশাখে, বললামই তো। আর এ-বই বেরোচ্ছে আশ্বিনে।