বহু যুগের ওপার হতে, প্রাচীন গ্রীক কবিতার অনুবাদ -শিশিরকুমার দাশ

Click on the button below to contact us on WhatsApp, and buy.

BUY ON WHATSAPP

HOW TO PAY

You can pay send your payment at any of the following UPI IDs, or scan the QR code, or send the payment directly to our bank:

INDIA POST PAYMENTS BANK

India Post

(IPPB) UPI ID= 9563646472@postbank
Malay De Sarkar
A/C No: 100005759940
IFSC: IPOS0000001
Mobile: 9563646472
STATE BANK OF INDIA

India Post

(SBI) UPI ID= 9563646472@sbi
Malay De Sarkar
A/C No: 32004843406
IFSC: SBIN0000162
Mobile: 9563646472

মহাকাব্য ও নাটকের মতােই ইউরােপীয় গীতি-
কবিতারও জননী গ্রীস। এ কবিতায় নেই যুদ্ধ
বিগ্রহের উন্মাদনা, জয়পরাজয়ের উদ্বেলিত ইতিহাস;এখানে মানুষের সুখ-দুঃখ, হিংসা-পরিহাস ভালােবাসা-মমতার উজ্জ্বল মুহূর্ত দিয়ে গড়া এক অন্তরঙ্গ জগৎ। এর মধ্যে গাথা হয়ে আছে।মানুষের বাইরে থেকে ভেতরের দিকে যাবার ইতিহাস। বিশ্বস্ত এবং কুশল অনুবাদে সেই
প্রাচীন জগৎকে আধুনিক মানুষের কাছে উপস্থিত করেছেন শিশিরকুমার দাশ।কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, গল্প লেখক ও দিল্লি
বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-অধ্যাপক শিশিরকুমার দাশের আর একটা পরিচয় তিনি অনুবাদক। মূল গ্রীক থেকে তিনি এর আগে অনুবাদ করেছেন এউরিপি-দেসের বন্দিনী’, সােফোক্লের্সের ‘আন্তিগােনে’ ও‘রাজা অইদিপউস’ এবং আরিস্ততলের কাব্যতত্ত্ব।তার নিরভিমান পাণ্ডিত্যের ফসলও প্রচুর –Under the shadow of the Cross, Western Sailors Eastern Seas, The Artist in Chains,The Mad Lover, বাংলা ছােটোগল্প, কবিতার মিল ও অমিল ‘শাশ্বত মৌচাক : রবীন্দ্রনাথ ও স্পেন’ (শ্যামাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের সহযােগে)।অন্য ভাষায় বাংলা সংস্কৃতি চর্চার ফলে তিনি দু-বার রবীন্দ্র পুরস্কার পেয়েছেন।এইসব কবিতা লেখা হয়েছিল দুই থেকে আড়াই হাজার বছর আগে গ্রীসে।যে জগতের মানুষের জন্য লেখা হয়েছিল এ কবিতাগুলি, সে জগৎ হারিয়ে গেছে চিরদিনের জন্য ; যে ভাষায় লেখা হয়েছিল এ কবিতাগুলি সে ভাষায় কোনাে মানুষ কথা বলে না আর। এরা সব প্রাচীন কালের,প্রাচীন ভাষার কবিতা। বহুযুগের ওপার হতে ভেসে আসা প্রাচীন কবিদের কণ্ঠস্বর।কিন্তু যখন লেখা হয়েছিল কবিতাগুলি তখন সে ভাষা ছিল জীবন্ত,সে ভাষায় জননী শােনাতেন শিশুকে ঘুমপাড়ানী গান, সে ভাষায় প্রেমিক ভালােবাসা নিবেদন করতেন প্রেমিকাকে, সে ভাষায় কোনাে অত্যাচারিত ক্রীতদাস তার বেদনার কথা বলতেন সমব্যথী বন্ধুকে। সে ছিল মানুষের মুখের ভাষা। এ কবিতাগুলি ছিল এক জীবন্ত জগতের অংশ। যারা সেই প্রাচীন গ্রীক ভাষা শিখেছেন তারাও সেই প্রাচীনকে, সেই জীবন্ত অতীতকে আজ স্পর্শ করতে পারবেন না। স্থানে ও কালে সেই জগৎ সুদূর, অনায়ত্ত।সেই জগৎ চিরমোন।
সেই গ্রীস লুপ্ত, তবু মানুষের স্মৃতিলগ্ন ; সেই গ্রীকভাষা লুপ্ত, তবু তারই পরিবর্তিত রূপ এখনও প্রবহমান । সমস্তই হারায়নি, মানুষের।ইতিহাসে সবই আছে ; স্মৃতির সুদূরতম তটে এখনও সুদূরতম অতীত প্রাণময়। তাই সেই গ্রীস সুদূর, কিন্তু অনায়ত্ত নয় ; প্রাচীন, কিন্তু এ প্রাচীন নয় চিরমৌন । কালের ব্যবধান, চিন্তার ব্যবধান, নানা সমুদ্র নদী প্রান্তরের ব্যবধান সত্ত্বেও এ প্রাচীনের কণ্ঠস্বর এখনও ভেসে আসছে।গ্রীক কবিতার জগৎ পুরােটা আমাদের চেনা নয়। তার সংস্কৃতির,তার সংস্কারের অনেকটাই আমাদের অচেনা। কোন বিদেশের কবিতার জগৎ আমাদের কাছে সম্পূর্ণ চেনা? কিন্তু যা মানুষের সৃষ্টি তা কি আরেকটি মানুষের কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত হতে পারে ? গ্রীক কবিতার
জগৎ আমাদের অনেকটাই চেনা কারণ তা মানুষের আশানিরাশা দুঃখ-সুখেরই জগৎ। সেই সুখদুঃখের বােধেই তাে আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আমরা অবিচ্ছিন্ন। আমাদের কণ্ঠস্বরে আমাদের পূর্বপুরুষেরাও কথা বলেন। প্রাচীন জগতের কবিতা তাই কবিতার প্রাচীন জগৎ মাত্র নয় ।চিরকালের বীজ তার মধ্যে সুপ্ত, সে বীজ জেগে ওঠে নতুন জগতের হাওয়ায়,প্রাচীন আর আধুনিককে মিলিয়ে দেয় ।এই অনুবাদে এক দেহ থেকে অন্য দেহে আশ্রয় নিয়েছে কবিতাগুলি,এই অনুবাদে এক কালের কবিতা অন্য কালের কবিতার কাছাকাছি আসতে চেয়েছে। আর এই প্রাচীন যদি শুধু এককাল বিলগ্ন হত, তাহলে অনুবাদের প্রয়ােজন হত না।এ প্রাচীন অমরণীয় ; অনুৎপন্ন আগামীর সখা।প্রাচীন গ্রীস শুধু প্লেটো সক্রেটিসের জগৎ নয়, নয় শুধু সােলােন পেরিক্লেসের। নয় শুধু প্রবল বীর্য এবং অতলস্পর্শী আর্তনাদের জগৎ।
আরেকটি জগৎ ছিল, সে জগৎ সাধারণ মানুষের, সেও এক বহুবর্ণ, বহুস্বর,
বহুগন্ধস্পর্শময় জগৎ। যে জগতের উপাদান ভালােবাসা, ঈর্ষা, কলহ,পরিহাস, বিস্ময় ছােটো সুখ ছােটো দুঃখের জগৎ। সেই গ্রীস এই
কবিতাগুলির জগৎ। সুদূর প্রাচীন গ্রীস এখন মনে হয় নিকট অন্তরঙ্গ।

Scroll to Top