জীবনানন্দ: সমাজ ও সমকাল – সুমিতা চক্রবর্তী

Call / WhatsApp : +91 9563646472

To purchase / enquire about the book, send a WhatsApp message or call between 11 AM and 11 PM.

Description

কবি জীবনানন্দ দাস,যে আলাদা তা প্রমাণ করেছে কাল, প্রমাণ করেছে তাঁর প্রয়াণের পরে প্রবাহিত সময় ও বাংলা কবিতার ধারায় তাঁর সৃষ্টি-সম্ভারের অবস্থান। নিজেদের রচনায় তাঁর কবিতার অনুভবলােক ও ভাষা-শিল্পের উৎস থেকে সেচের জল নিয়েছেন সর্বাধিক সংখ্যায় বাঙালি কবি-বিগত কয়েক দশক জুড়ে। রবীন্দ্র-উত্তর কবিদের মধ্যে তাঁকে নিয়েই প্রস্তুত হয়েছে সর্বপ্রথম নিবেদিত কবিতাবলীর সংকলন (জীবনায়ন, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত,
পরিবেশনা গ্রন্থবিতান, কলকাতা, ১৯৬০) ; তাঁর সাহিত্যের আলােচনাতেই লেখা হয়েছে সবচেয়ে বেশি বই ও প্রবন্ধ। প্রতিভার মহত্ত্ব নিশ্চয়ই তার অন্যতম কারণ। কিন্তু কবিতার করণকুশলতার তারতম্যের হিসেবে এই মহত্ত্বের পরিমাপ করা যাবে না। কবিতার রূপনির্মাণে তাঁর চেয়ে কম দক্ষ ছিলেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত বা বিষ্ণু দে বা অমিয় চক্রবর্তী—একথা অতি বড় জীবনানন্দভক্তও বলতে পারবেন না অনায়াসে।জীবনানন্দ বাংলা কবিতায় একটি স্বতন্ত্র স্থান অধিকার করেছেন কারণ তাঁর উপলব্ধি, তাঁর জীবন-ভাবনা, দৃষ্টি ক্ষেপণের কৌণিকতা ছিল অন্য কবিদের তুলনায় মৌলিক। জীবনানন্দ-প্রতিভার অ-পূর্বতাআসলে এই স্বাতন্ত্রেই নিহিত।জীবনানন্দের সেই স্বাতন্ত্রটি কোথায় ছিল তার অনুসন্ধানে আমাদের চলে যেতে হয় তাঁর জীবনেরই প্রসঙ্গে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে, জীবন-ব্যাপারে, তিরিশের কবিদের মধ্যে একা জীবনানন্দেরই ছিল এক বিচিত্র সাদৃশ্য। দুজনেই ছিলেন ব্রাহ্মপরিবারের সন্তান।জীবনানন্দের সমকালীন কবিরা কেউই তা ছিলেন না। জীবনানন্দের পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত প্রথম ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন ; জাতিগত বৈদ্যত্বের নিশ্চিত চিহ্ন স্বরূপ ‘দাশগুপ্ত’ পদবির বদলে লিখতে শুরু করেন ‘দাস। তিনি বসবাস ও জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন বরিশালে। বরিশালে সেই সময়ে অত্যন্ত সুস্থিত এক ব্রাহ্মসমাজ গড়ে উঠেছিল।জীবনানন্দের প্রয়াণ ১৯৫৪ সালে। তখনও একালীন অর্থে বিশ্বায়ন শব্দটি বহুল প্রচলিত হয়নি।তবু জীবনানন্দের কবিতায় এই পদ্ধতি এবং পরিস্থিতির সুচিরব্যাপ্তি অনুভব করা যায়।একে কি বলব কবির প্রজ্ঞাদৃষ্টি? কবিরা ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হন—এই বলে বিস্ময়াহত হব জীবনানন্দের প্রতিভায়? তার কোনাে প্রয়ােজন নেই। বিশ্বায়ন শব্দটির বহুল প্রচার ঠিক সেই সময় না হলেও বিশ্বায়ন পদ্ধতি সেই সময়ে যথেষ্টই প্রত্যক্ষ হয়ে উঠেছিল। বস্তুত সম্পূর্ণ একালীন ব্যঞ্জনার্থেই বিশ্বায়ন ব্যাপারটি বহুকাল থেকেই প্রচলিত আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে তার প্রকোপ বহুগুণিত হারে বেড়ে চলতে শুরু করেছিল। জীবনানন্দ নিজের চোখেই এই
পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং তাঁর অত্যাশ্চর্য অনুভব-ক্ষমতায় তার তাৎপর্যও বুঝে
নিয়েছিলেন।’মান্থলি রিভিউ’-পত্রিকার সহ-সম্পাদক পল্ এম. স্যুইজি (Paul. M. Sweezy)
একটি প্রবন্ধে লিখেছেন—’Globalization is not a condition or a phenomenon : It
is a process that has been going on for a long time, in fact ever since capitalism
came into the world as a viable form of society four or five centuries ago ;…’ (Monthly Review, September, 1997)। যেমন ফ্যাসিবাদকে আমরা বলতে
পারি সাম্রাজ্যবাদের চূড়ান্ত রূপ তেমনই বিশ্বায়নকে বলা যেতে পারে পুঁজিবাদের সচলতম
এবং কুশলতম শিখরায়ন।

Be the first to review “জীবনানন্দ: সমাজ ও সমকাল - সুমিতা চক্রবর্তী”