ঝুমুর কথা – ঝুমুর গীতি সংগ্রহ

Click on the button below to contact us on WhatsApp, and buy.

BUY ON WHATSAPP

HOW TO PAY

You can pay send your payment at any of the following UPI IDs, or scan the QR code, or send the payment directly to our bank:

INDIA POST PAYMENTS BANK

India Post

(IPPB) UPI ID= 9563646472@postbank
Malay De Sarkar
A/C No: 100005759940
IFSC: IPOS0000001
Mobile: 9563646472
STATE BANK OF INDIA

India Post

(SBI) UPI ID= 9563646472@sbi
Malay De Sarkar
A/C No: 32004843406
IFSC: SBIN0000162
Mobile: 9563646472
[wbcr_html_snippet]: PHP snippets error (not passed the snippet ID)

 

পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম, ঝাড়খন্ডের রাঁচী, সিংভূম, হাজারিবাগ, পালামৌ,গিরিডি, ধানবাদ, বােকারাে, সাঁওতাল পরগনা, ওড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ,কেঁওনঝাড়,সুন্দরগড়, সম্বলপুর
ইত্যাদি এক বিস্তীর্ণ এলাকায় একটি জনপ্রিয় তথা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল সঙ্গীতধারা আবহমান থেকে প্রচলিত রয়েছে যা ‘ঝুমুর’ নামে পরিচিত। যাকে স্থানীয় উচ্চারণভেদে কখনও ‘ঝুমের’, ‘ঝমইর’, ‘ঝুমরি ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়। এই ‘ঝুমুর’ শব্দের উৎপত্তি সম্বন্ধেও
গবেষকগণের নানান মতামত রয়েছে। সে প্রসঙ্গে না গিয়ে আমরা এই এতদঞ্চলের সঙ্গীতরসিক
– মানুষদের পুরুষানুক্রমিক সৃজিত, লালিত ও পরিপুষ্ট একটি স্বতন্ত্র সঙ্গীতধারা হিসেবেই ঝুমুরকে উল্লেখ করার পক্ষপাতী।
সাহিত্যরত্ন হরেকৃষ্ণ মুখােপাধ্যায় ঝুমুর সম্বন্ধে বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের ঝুমুর গান কতদিনের
পুরাতন কেহ বলিতে পারে না। আমাদের মনে হয় ঝুমুরের বয়স এখন হইতে কমবেশি প্রায় হাজার
বছরের কাছাকাছি হইবে। ঝুমুরের সঙ্গে কীর্তন মিলিয়া যাত্রার উদ্ভব। ঝুমুরের পরে দ্বিতীয় স্তরে
আমরা মঙ্গলকাব্যের সাক্ষাৎ পাই।” শ্রী সুভাষ বন্দোপাধ্যায় তার ‘পশ্চিম সীমান্তবঙ্গের লােকগীতি’ গ্রন্থে ঝুমুর প্রসঙ্গে লিখেছেন, ঝুমুর শব্দটি মধ্যযুগে বেশ প্রচলিত ছিল। পদকল্পতরুর একটি পদে পাই – “যুবতী যুথ শত গায়ত ঝুমরী।” ঝুমুর গবেষক ও কবি হারাধন মাহাতাে তার আদিরসকলা ঝুমুর পদাবলীতে লিখেছেন, “দাড়নাচের দাড়শালিয়া ঝুমুর এই ভাদরিয়া। দাড় নাচ সমবেত নৃত্য।যা অঙ্গে অঙ্গে জড়িয়ে হাতে হাত ধরাধরি করে নাচতে হয়। পরস্পর হাত ধরাধরি করে নাচে তাই এখানে কোন মুদ্রা প্রদর্শনের সুযােগ থাকে না। দাড় নাচ বা ভাদরিয়া ঝুমুর রাঢ় বাংলার প্রাণস্বরূপ।আদিকালে নাচটিতে মেয়েরা নাচত অরি পুরুষরা বাজাতাে। এই চলন বা প্রথা ৪০/৫০ বছর আগে
পর্যন্ত বর্তমান ছিল। শােনা যায় কারও মেয়ে বা কারও বৌ নাচতে না এলে দলের কোন সুসম্পর্কের বাজুয়া গিয়ে তাকে তার স্বামীর কাছে থেকে তুলে নিয়ে আসত। সারা রাত্রি পুরুষদের বাজনায়।অন্যান্য মেয়েদের সঙ্গে ঝুমুর খেলে ভােরবেলায় বাড়ি ফিরত।”মিহিরলাল সিংদেও তার কালের প্রেক্ষাপটে ঝুমুর ও স্বরলিপি গ্রন্থে বলেছেন, “ঝুমুরের গােড়াপত্তন” ও নামকরণ কখন কিভাবে হয়েছিল তা নিয়ে আজকে নিশ্চিত করে বলা খুবই মুস্কিল ব্যাপার।আধুনিক ঝুমুর রাধাকৃষ্ণ প্রেম দেহতত্ত্ব তথা নানান কল্পকাহিনীকে বিসর্জন দিয়ে বাস্তবের কঠিন মাটিতে আছড়ে পড়েছে। ঝুমুরে এসেছে নানা সামাজিক রাজনৈতিক সমস্যা। কাব্যযুগের
শেষদিকে কবি সৃষ্টিধর সিং মাহাতাে পুরুলিয়ার বঙ্গভুক্তির বিরােধিতা করে লিখেছেন, “মানভুম
আহেইক বিহারে আর রহতেক বিহারে” এইরকম অনেক ঝুমুরে মানভুমকে বিহারে রাখার জন্য
জনমত গঠনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ঝুমুর যখন নিন্দিত ঘৃণিত রুচিবান
শিক্ষিত সমাজ কর্তৃক বর্জিত ওইসময় ডঃ পশুপতিপ্রসাদ মাহাতাে, কুচিল মুখার্জিদের মত
উচ্চশিক্ষিত ব্যাক্তিরা পারিবারিক বাধাবিপত্তি সত্বেও ঝুমুরে অংশগ্রহণ করেন। কুচিলকে
একসময় বাড়ি থেকে তাড়িয়েও দেওয়া হয়েছিল তবু তিনি ঝুমুরকে বিসর্জন দেননি। তার
কলম থেকেই বেরিয়ে এসেছিল পুরুলিয়ার বঞ্চনার কথা। “লেলহা ছেল্যা পুরুল্যা তর টেনাও
জুটল নাই।” মিহিরলাল সিংদেও জমিদার বাড়ির ছেলে। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে প্রথাগত শিক্ষায়
শিক্ষিত হয়েও ঝুমুর গানকে আপন করে নিয়েছেন। ঝাড়গ্রামের স্বনামধন্য কবি ভবতােষ শতপথী প্রচুর উল্লেখযােগ্য ঝুমুর রচনা করেছেন। সাহিত্যিক সৈকত রক্ষিত, ঝুমুর গবেষক সুভাষ রায়,রবীনকুমার পান্ডে, ললিতমােহন মাহাতাে, মন্মথ মাহাতাে, সন্তোষ মাহাতাে, গােবিন্দলাল মাহাতাে,লালজি প্রমুখ বহু উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়ে ঝুমুর রচনায় অংশ নিচ্ছেন। কেউ কেউ মেয়েদের নিয়ে পাতা নাচের দল গড়ছেন ঝুমুরের জনপ্রিয়তা বজায় রাখার জন্য।

Scroll to Top