Description
একদা বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর অঞ্চলের নাম ছিল গােপভূম। আজও যা গােপভূম পরগণা বলে পরিচিত।প্রাগৈতিহাসিক যুগের বণ্য শিকারীরা বাস করেছে এই গােপভূমে। দুর্গাপুরের মাটি থেকে আবিস্কৃতি হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের নানা যন্ত্রপাতি। এই মাটিতেই একদিন বন্য পশু শিকারীরাই শিখেছে পশুপালন এবং পরে চাষবাস। বিনয় ঘােষ তার পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি
গ্রন্থে বলেছেন-“বর্ধমান জেলার বর্তমান গােপদের আদিপুরুষ তারাই যারা সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগে প্রথম পশুপালন করে স্থায়ী উন্নত সভ্যতার স্তরে অগ্রসর হয়েছিল। কৃষির পত্তন করেছিল যারা, তারাই বর্তমান
সদগােপদের আদিপুরুষ।” যাযাবর আর্যদের ভারতে আগমনের বহুআগে থেকেই গােপভূমের গােপ-সদগােপদের আদি পুরুষেরা কৃষি ও পশুপালনের দ্বারা রাঢ় বাংলার গ্রামীন সভ্যতার বিকাশে সহায়তা করেছে।পরবর্তীকালে গােপভূমের গােপ সদগােপরাই পশ্চিমবাংলার পশুপালন ও কৃষি সভ্যতার অন্যতম ধারক বাহক বলে পরিগণিত। এদের মধ্যে অনেকে দলপতি গােষ্টীপতি থেকে নরপতি অর্থাৎ রাজা হয়েছিলেন। বিনয় ঘােষের কথায়“গােপভূমের সদগােপ রাজবংশের ইতিহাস বর্ধমান তথা রাঢ়ের এক গৌরবময়যুগের ইতিহাস। আজও সেই অতীতের স্মৃতিচিহ্ন ভাল্কি, অমরাগড়, কাঁকসা, রাজগড়, গৌরাঙ্গপুর প্রভৃতি অঞ্চলে রয়েছে।”স্বাধীনতার এক যুগের মধ্যে আধুনিক দুর্গাপুরের জন্ম। তার পরিচিতি শিল্প শহর হিসাবে। দুর্গাপুর আজ ভারতের রাঢ়(RUHR) বলে অভিহিত। ১৮৫৫ খ্রীষ্টাব্দে বর্ধমান থেকে অণ্ডাল পর্যন্ত পূর্ব রেলপথের সম্প্রসারণ কালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দুর্গাপুর রেলওয়ে স্টেশনটি। অখ্যত অবজ্ঞাত দুর্গাপুর গ্রাম এল প্রচারের আলােয়। দুর্গাপুর আজ মহকুমা শহরে উন্নীত। ক্ষুদ্রায়তন বৃহদায়তনে পরিণত।এক সময়ে রাণীগঞ্জ পরে আসানসােল মহকুমার অধীন ছিল
দুর্গাপুর। ১৯৬৮ সালের ৪ঠা এপ্রিল(4.4.1968) থেকে দুর্গাপুর, ফরিদপুর,অন্ডাল, কাঁকসা এবং বুদবুদ এই পাঁচটি থানা নিয়ে গড়ে উঠেছে দুর্গাপুর মহকুমা। আয়তন ৯৭৫ বর্গ কিলােমিটার। ২০১৭ থেকে দুর্গাপুর মহকুমা নতুন জেলা পশ্চিম বর্ধমান জেলার অধীন হল। দুর্গাপুর মহকুমার ইতিহাসে এই বছরটি তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমন্ডিত। কুনুর কথার দুর্গাপুর মহকুমার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ বিশেষ সংখ্যা করার পরিকল্পনাটি করেছেন গবেষক ড. ফণী পাল।বিশাল আয়তন দুর্গাপুর মহকুমার বিষয় বৈচিত্রও বিশাল। ভুতত্ত্বপ্রত্নতত্ত্ব-ঐতিহাসিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক,কৃষি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি সবদিক দিয়েই অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী দুর্গাপুর মহকুমা। সকল
বিষয় তুলে ধরা অসাধ্য। তাই দুর্গাপুর মহকুমা বিষয়ক নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের উপর তথ্যমূলক প্রবন্ধে সজ্জিত হল কুনুর কথার শারদ সাহিত্যাঞ্জলি ১৪২৪ দুর্গাপুর মহকুমার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ বিশেষ সংখ্যা।
Be the first to review “দুর্গাপুর মহকুমার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ বিশেষ সংখ্যা -কুনুর কথা”
You must be logged in to post a comment.