পার্বত্য কাহিনী -প্রভাস চন্দ্র রায়

Click on the button below to contact us on WhatsApp, and buy.

BUY ON WHATSAPP

HOW TO PAY

You can pay send your payment at any of the following UPI IDs, or scan the QR code, or send the payment directly to our bank:

INDIA POST PAYMENTS BANK

India Post

(IPPB) UPI ID= 9563646472@postbank
Malay De Sarkar
A/C No: 100005759940
IFSC: IPOS0000001
Mobile: 9563646472
STATE BANK OF INDIA

India Post

(SBI) UPI ID= 9563646472@sbi
Malay De Sarkar
A/C No: 32004843406
IFSC: SBIN0000162
Mobile: 9563646472

বাংলা ১৩১৪ সনের ফাগুন অর্থাৎ ১৯০৭-এ প্রকাশিত, প্রভাস চন্দ্র রায়ের‘পার্বত্য কাহিনী’ সম্ভবত বাংলা ভাষায় রচিত,সাঁওতাল পরগনার ইতিহাস সংক্রান্ত প্রথম গ্রন্থ। লেখকের নিজের রচিত কথায় জানা যায় যে, তিনি এই গ্রন্থ প্রণয়নে‘বিশেষ সাহায্য’ গ্রহণ করেছিলেন ১৯০৫-

এ প্রকাশিত, সাঁওতাল পরগনার ইতিহাস
সংক্রান্ত অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইংরেজি গ্রন্থ – এফ.
বি. ব্র্যাডলি বার্টের ‘দি স্টোরি অফ অ্যান
ইন্ডিয়ান আপল্যান্ড’ থেকে।এছাড়াও গ্রন্থে নানান প্রাসঙ্গিক তথ্যের যােগসাধন তার একান্ত নিজস্ব অনুসন্ধানের ফল।বৃহত্তর সাঁওতাল পরগনার মানুষ ও ইতিহাস ভিত্তিক পরবর্তী আলােচনায়
এই গ্রন্থের উল্লেখ প্রায় পাওয়াই যায় না। এই
গ্রন্থটি এককথায় দুষ্প্রাপ্য।গ্রন্থের লেখক প্রভাস চন্দ্র রায়ও তাঁর বইটির মতােই অপরিচিত ও বিস্মৃত।প্রকাশের পর একশাে বছর পার হয়ে গেলেও মধ্যবর্তী সময়ে এ বইটির আলােচনা বা উল্লেখ বিরল। সাঁওতাল পরগনা বা সাঁওতাল বিদ্রোহ নিয়ে যাঁরা গবেষণা বা লেখালেখি করেছেন, তাদের লেখাতেও বইটির নাম চোখে পড়ে না। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির‘বাংলাভাষায় ইতিহাস চর্চা গ্রন্থপঞ্জি, ১৮০১-১৯৯০‘ (সম্পাদনা সুনীলবিহারী ঘােষ) বইটিতে অবশ্য ‘পাৰ্বত্য-কাহিনী’র নামটি উল্লিখিত হয়েছে।বাঙালি পাঠক-লেখক-গবেষকদের কাছে পার্বত্য-কাহিনী’ গুরুত্ব পাওয়ার দুটি সম্ভাব্য কারণ অনুমান করা যায়। প্রথম,ব্র্যাডলিবার্টের বহুল প্রচারিত ‘দি স্টোরি অফ অ্যান ইন্ডিয়ান আপল্যান্ড’ যে গবেষকেরা ব্যবহার করেছেন, পার্বত্য-কাহিনী’ যেহেতু অনুবাদগ্রন্থ, তাদের কাছে গুরুত্ব পায়নি। দ্বিতীয় এবং সরলতর কারণটি, বিস্মরণ। বােঝা যায়, গবেষকেরা নন, ‘পাৰ্ব্বত্য-কাহিনীর লক্ষ-পাঠকদল সাধারণ পড়ুয়ারাই। হয়তাে সাঁওতাল পরগনা, তার জনজীবন, সাঁওতাল বিদ্রোহ ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণ্যে আগ্রহ সঞ্চারিত হওয়ার আগেই আলােচ্য গ্রন্থটি বাঙালি পাঠকসমাজের বিস্মৃতির অন্তরালে চলে গিয়েছিল।সাঁওতাল পরগনা নিয়ে সাধারণ্যে কতটা কৌতূহল ছিল কোনাে প্রত্যক্ষ সূত্র থেকে তা আজ আর বােঝার উপায় নেই। যে পরোক্ষ সূত্রটি থেকে  আগ্রহের ধরন ও মাত্রা কিছুটা বােঝা যেতে পারে সেটি হল সাঁওতাল পরগনা ও সাঁওতাল জনসমাজ নিয়ে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এবং বিশ শতকের সূচনাকালে বিপুল সাহিত্যসম্ভার প্রধানত ইংরেজি ভাষায়—যাঁর সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের অন্য কোনাে অঞ্চল বা জনজাতি বিষয়ক আলােচনা, গুণ ও পরিমাণে তুলনীয় নয়। অন্যদিকে, এ বিষয়ে বাংলা ভাষায় লেখালেখি, সংখ্যায় অল্প হলেও, নানা কারণে চিত্তাকর্ষক।সাঁওতাল জাতির প্রাচীনতম উল্লেখ পাওয়া যায় স্যার জন শশারের ‘Some Extraordinary Facts, Customs, and Practices of the Hindus’ প্রবন্ধে (১৭৯৫)। কোম্পানির শাসনাধীন, অপেক্ষাকৃত কম
সভ্য এলাকা রামগড়ে বসবাসকারী ‘সাওন্তার’ নামে একটি বর্বর অশিক্ষিত জাতির কথা লেখেন তিনি। ১৮১৮ সালে সাদারল্যান্ডের ‘দামিন-ই-কো’ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দ্বিতীয়বার উল্লেখিত হয় এই
জাতির অস্তিত্ব। এ অঞ্চলের দক্ষিণ প্রান্তে পরিশ্রমী ‘সাওন্তার’কৃষকদের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রতিবেদন অনুসারে পাহাড়িয়াদের নিয়মিত আক্রমণ থেকে উর্বর নিম্নভূমিকে বাঁচানাের জন্য বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও ভাগলপুরের ১৩৩৬ বর্গমাইল পাহাড়, জঙ্গল ও
আবাদি জমিকে চিহ্নিত করে তার নাম দেওয়া হয়েছিল দামিন-ই-কো।ওই এলাকা ছিল পাহাড়িদের জন্য সংরক্ষিত কলােনি।সুপারিনটেন্ডেন্ট জন পেটি ওয়ার্ড ও সার্ভেয়র ট্যানারের নেতৃত্বে ওই এলাকা পাকা পিলার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। পাহাড়িয়ারা কোনাে ভাবেই জঙ্গল হাসিল করে চাষবাসে আগ্রহী হবে না বােঝার পর ওয়ার্ড, সরকারি নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে, এই কলােনিতে সাঁওতালদের এনে বসান। কঠোর পরিশ্রমী সাঁওতালদের হাতে জঙ্গল মুছে জন্ম নেয় উর্বর আবাদি জমি। ১৮৩৬ সালে গ্রামের সংখ্যা হয় ৪২৭ এবং ১৮৫১ সালের মধ্যে পত্তন হয় দেড় হাজার গ্রাম। নতুন আবাদি জমিতে হৈমন্তিক ফসলের সােনালি রং ডেকে
আনে বিপন্নতা। দামিন-এর সীমানা ঘিরে গড়ে ওঠে বিহার ও বাংলা থেকে আসা হিন্দু মহাজন ব্যবসায়ীদের বসতি। নতুন শােষণ চক্র।পরিণতিতে দামিন-ই-কো দ্বিতীয় প্রজন্মের সাঁওতালেরা সামিল হয়  অভ্যুত্থানে, আরও একবার প্রব্রজনের পথে মালদা থেকে উত্তরবঙ্গ আসাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ার আগে।

Scroll to Top