Description
১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১১ই মার্চ ম্যাডান থিয়েটারে ‘রঘুবীর’ মঞ্চস্থ হল।শিশিরকুমার রঘুবীর’-এর ভূমিকায় নামলেন। এ-অভিনয় দেখে গ্যালারিও
মেতে উঠল -হাঁ, শিশির ভাদুড়ীর গলা আছে। এই অভিনয়-প্রসঙ্গে সৌরীন্দ্রমােহন লিখেছেন : “রাত্রে রঘুবীর খোলা হবে সেদিন মহাত্মা গান্ধি
হলেন এ্যারেস্ট।এ খবর কলকাতায় পৌঁছুবামাত্র সন্ধ্যার প্রাক্কালে দোকান পাট হল বন্ধ। যারা রঘুবীর’-এর পােশাক দেবে, তারা দিতে পারল না।
অভিনয় বন্ধ দেওয়া হল না – উপায় ? শিশিরকু-মার, মণিলাল (গঙ্গোপাধ্যায়)এবং আমি(লেখক) – তিনজনে পরামর্শ করে স্হির হল খদ্দর পরে রঘুবীর নামবেন।খদ্দর কোথায় পাওয়া যায় ? দোকান-পাট বন্ধ। হাতিবাগানের মােড়ে
কণওয়ালিশ থিয়েটারের প্রায় সামনে এক ভদ্রলােকের কাপড়ের দোকান ছিল।ভদ্রলোক থাকতেন শ্যামপুকুর লেনে। তাঁকে ধরে নিয়ে
এসে– প্রয়ােজনের গুরত্ব বুঝিয়ে বলা হলো। তিনি করলেন সাহায্য।দোকান খুলে চুপি চুপি খদ্দরের ব্যবস্হা হলো। সেই খদ্দর কর্ণওয়ালিশে’ নিয়ে আসা হলো এবং শিশিরকুমার সেই খদ্দর পরে নামলেন মঞ্চে রঘুবীরের ভূমিকায়।
‘রঘুবীর’ অভিনয়ে যে বিরাট আন্দোলনের সষ্টি হয়েছিল এবং শিশিরকুমার যে বিপুল অভিনন্দন পেয়েছিলেন সেই প্রসঙ্গে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র
লিখেছেন : ‘ক্ষীরােদপ্রসাদের রঘুবীর নাটক নিয়ে শিশিরকুমার যখন পাদপ্রদীপের সম্মুখে দাঁড়ালেন -তখন তাঁর উদাত্ত কণ্ঠস্বর দৃপ্ত
বীরত্বব্যঞ্জক ভঙ্গিমা সমস্ত দর্শকদের চিত্রার্পিত করে প্রেক্ষাগৃহে রেখে দিলে।সারা নাট্যজগতে বিরাট আন্দোলন উপস্থিত হল – দলে দলে দর্শক আসতে লাগল শুধু শিশিরকুমারের রঘুবীর দেখতে।কণ্ঠস্বরের চাতুর্য,অপূর্ব আবৃত্তি-ভঙ্গিমা, দেহ-সৌষ্ঠব, ব্যক্তিত্ব সবকিছু মিলিয়ে একজন বিরাট প্রতিভাময় পুরুষকে দেখে সকলেই আশ্বস্ত হলেন এই ভেবে যে বাংলার পেশাদার রঙ্গমঞ্চ এবার সত্যিই মহিমময় নাট্যপ্রতিভার স্পর্শ পেয়ে ধন্য হল -বঙ্গ রঙ্গমঞ্চে এক নতুন জীবনের ছোঁয়াচ লাগলো’। 1925 খ্রিস্টাব্দে দিলীপ কুমার রায় শিশিরকুমারের রঘুবীর দেখে তার অভিনয় শিল্পের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে একটি প্রবন্ধ লেখেন।
Be the first to review “নাট্যাচার্য শিশিরকুমার -শংকর ভট্টাচার্য”
You must be logged in to post a comment.