Description
এই বইয়ের মুখবন্ধে ১০অক্টোবর-১৯৪৬ জহরলাল নেহেরু বলেছিলেন “……আজাদ হিন্দ ফৌজ শুধু মালয়, ব্ৰহ্ম প্রভৃতি দেশে তাহার ইতিহাস রচনা করে নাই,তাহার ইতিহাস রচিত হইয়াছে ভারতবর্ষের জনসাধারণের অন্তঃকরণে।••••••ইহার স্মৃতি দেশবাসীর মনে চিরজাগরূক থাকিবে।••••••এ পৰ্যন্ত এই বিষয়ে অনেক পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছে বটে কিন্তু সে সবগুলিই মুহূর্তের উত্তেজনাপ্রসূত।•••••আমার বন্ধু ও সহকৰ্মী মেজর জেনারেল শাহনওয়াজ খান এই পুস্তকে আজাদ হিন্দ কৌজের কীর্ত্তিকলাপ সুসংযত ভাষায় প্রকাশ করিয়া দেশবাসীকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের একখানি অতি মূল্যবান ইতিহাস উপহার দিয়াছেন। …… আমার মনে হয় আজাদ হিন্দ ফৌজ সম্বন্ধে যত পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছে তাহার মধ্যে এইখানিই সর্বশ্রেষ্ঠ।—- প্রত্যেক দেশবাসীকে আমি ইহা পাঠ করিতে অনুরােধ করি। ইহা পাঠে এই অসমসাহসিক অভিযান সম্বন্ধে অনেক নূতন তথ্য জানিতে পারিবেন। জয় হিন্দ।”
আর এই বইয়ের ভূমিকাতে লেখক মেজর জেনারেল শাহনওয়াজ খান বলেছেন।ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের ইতিহাসে আজাদ হিন্দ ফৌজের কীর্ত্তিকাহিনী একটি গৌরবােজ্জ্বল অধ্যায়। দিল্লীর লাল কেল্লায় আজাদ হিন্দ ফৌজের অফিসার হিসাবে ক্যাপ্টেন পি, কে, সাইগল, লেফট, জি, এস, ধীলন ও আমার সামরিক আদালতে যে বিচার হয় তাহা জনসাধারণের যেরূপ দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল, পূৰ্ব্বে বা পরে, ভারতবর্ষের কোন সামরিক বা অসামরিক বিচার এইরূপ দৃষ্টি আকর্ষণ করে নাই। বিচারে মুক্তিলাভের পর ভারতবর্ষের বহুস্থানে ভ্রমণ করিবার স্থযােগ আমার ঘটিয়াছে। যখনই যেখানে গিয়াছি জনসাধারণের মধ্যে আজাদ হিন্দ ফৌজ ও তাহার নেতাজী সম্বন্ধে বিশদ বিবরণ জানিবার জন্য আকুল আকাক্ষা সর্বত্রই লক্ষ্য করিয়াছি। সাধারণের এই আগ্রহ আজাদ হিন্দ ফৌজ সম্বন্ধে একটি সম্পূর্ণ ও প্রামাণিক বিবরণ লিপিবদ্ধ করিতে আমাকে উৎসাহিত করে। এই পুস্তক রচনা তাহারই ফল। প্রকৃত ঘটনাবলী যথাসত্য বর্ণনা করিবার প্রয়াস পাইয়াছি, ভাষা ও বর্ণনাপদ্ধতি অবশ্য সৈনিকের।কয়েকজন গ্রন্থকার আজাদ হিন্দ ফৌজ সম্বন্ধীয় পুস্তক সদ্য সুস্থ প্রচারের আগ্রহে, সেই সম্বন্ধে বিশেষ তথ্য অবগত না হইয়াই ইংরাজী ও কতিপয় দেশীয় ভাষায় কয়েকখানি পুস্তক প্রকাশ করিয়াছেন। ঐ , সকল পুস্তকের বিবরণ বহু বিষয়ে অসম্পূর্ণ ও ভ্রমাত্মক। বৰ্ত্তমান পুস্তক রচনার ইহা আর একটি কারণ। সামরিক আদালতে আমাদের বিচারের সময় আজাদ হিন্দ ফৌজ সম্বন্ধে বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলােচিত হয় নাই, যাহাও আলােচিত হইয়াছিল তাহাও সংক্ষিপ্ত। দীর্ঘ তিন বৎসর ও আট মাস আমার বহু সহস্র সহকর্মী নেতাজী সুভাষচন্দ্রের আদর্শ ও উপদেশে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হইয়া তাঁহার অনুপম নেতৃত্বে যে আন্দোলনের সহিত জীবনে ও মরণে জড়িত ছিলেন, এই গ্রন্থের বর্ণনার বিষয় তাঁহাদেরই কীর্ত্তি -কাহিনী।
Be the first to review “আজাদ হিন্দ ফৌজ ও নেতাজী -মেজর জেনারেল শাহনওয়াজ খান”
You must be logged in to post a comment.