ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল ১৯০৪-২০০৪ শতবর্ষ:স্মারক গ্রন্থ

Categories: ,

Call / WhatsApp : +91 9563646472

To purchase / enquire about the book, send a WhatsApp message or call between 11 AM and 11 PM.

Description


Sold Out

 

১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের চার জানুয়ারী গুরুচরণ মহলানবিশ নিজ বাসভবন ২১০/৫/১ কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটে ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল স্থাপন করেন। তখন স্কুলের নাম ছিল ‘ব্রাহ্ম বয়েজ বাের্ডিং এণ্ড ডে স্কুল।’এই নাম কয়েক বছর ছিল।
পরে এই বিদ্যালয় পরিচিত হয় ‘ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল’ নামে। সেই নামই চলতে থাকে। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যলয়ের অনুমােদিত বিদ্যলয়সমূহের তালিকাতেও ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুলের নাম আছে। পরে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষৎ প্রতিষ্ঠিত হলে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বিদ্যালয় পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে চলে আসে।১৯০৪-এর অখণ্ড বঙ্গে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ইঙ্গিত সামনে। সমাজ তখন টালমাটাল। সেই অখণ্ড বঙ্গে এই বিদ্যালয়ের সূচনা।ততদিনে ১৯০১-এর ডিসেম্বরে শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্য আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯০৫-এর ১৯ জানুয়ারী মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮০৭-১৯০৫) দেহরক্ষা করেছেন। তারও এগারাে বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ (২৪.৭.১৮৯৩)। ১৮৯১-এ পরলােকগমন করেছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এই রাজনৈতিক,সামাজিক পটভূমিতে গুরুচরণ প্রতিষ্ঠা করেন একটি বিদ্যালয়। মজার কথা হল, তাঁর আত্মজীবনীতে তাঁর কর্মমুখর জীবনের বিস্তৃত বিবরণ থাকলেও সেখানে ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা নেই -লিখেছেন ডঃ অশোক রুদ্র। ড: অশোক রুদ্র তাঁর রচিত সুবৃহৎ গ্রন্থ—Prasanta Chandra Mahalanabish. : A Biography(Oxford, 1st Edition)তে লিখেছেন : It is strange that Gurucharan Mahalanabish fails to mention in his autobiography his two (other) important achievements in the field of education. He was the founder of the Brahmo Boys’ School in 1904 and much earlier in 1879, took active part in the establishment of City School(p.21)কিন্তু প্রয়াত অধ্যাপক রুদ্র খেয়াল করেননি যে ‘আত্মকথা’-(১৯৭৪)১৬৫ পৃষ্ঠায় গুরুচরণ লিখেছেন: “ব্রাহ্ম বালিকা বোর্ডিং প্রতিষ্ঠার ভার আমার প্রতি অর্পিত হয়।৬ টি বালিকা উচ্চ বালিকা লইয়া উক্ত বালিকা বোর্ডিং প্রতিষ্ঠা করি। তিন বৎসরে ৪০/৪২টি বালিকা হইয়াছিল। ইচ্ছা ছিল আরও কতদূর উন্নতি হ‌ইতে পারে তা আমি দেখিব কিন্তু কার্য্য নির্বাহক সভা কোনো কারণে একজন লোকের হস্তে কার্য্যভার অর্পণ করিতে ইচ্ছা করে তাই আমি ছাড়িয়া দিই । তৎপরে ব্রাহ্ম বালক বোর্ডিং ও ডে স্কুল প্রতিষ্ঠিত করি। তাহাও এই ৭ বৎসর হইতে চলিল।কোন বড লোককে় আনিয়া আমি ইহার উচ্চপদে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলাম। তিনি আমাকে ছাড়াইতে চেষ্টা করিতেছেন; তথাপি আমি ছাড়তেছি না”। গুরুচরণ এই ‘আত্মকথা লিখতে শুরু করেন ১৯১৩খ্রিস্টাব্দে। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর। অনন্যকর্মা এই মানুষটির নিজস্ব কোন শিক্ষাগত শংসাপত্র ছিল না। তাঁর জীবন নিয়ে এই স্মারকগ্রন্থে স্বতন্ত্র প্রবন্ধ লিখেছেন ড: রণতোষ চক্রবর্তী। তাঁর -‘আত্মকথা’-শুধু তাঁর জীবন কথা নয়,তখনকার সমাজ, বিশেষভাবে ব্রাহ্মসমাজের এক অসাধারণ দলিল। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনীতে(১৯১৬)অজিতকুমার চক্রবর্তী মহর্ষির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দানের যে তালিকা দিয়েছেন সেখানে দেখেছি -“১৩০৮ সালের ১৭ ই ফাল্গুন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর গুরুচরণ মহলানবিশকে ‘ব্রাহ্ম বালক বিদ্যালয়’-এর জন্য পাঁচশত টাকা দেন।”(পৃ:৪৫১)।১৮৭৪-৭৫-এ ৩০, ঝামাপুকুর লেনের জায়গায় ঘােড়ার গাড়ির আস্তাবল ছিল। ১৮৭৬-এ আস্তাবল ঘিরে ঝুপড়ি তৈরি হয়, সৃষ্টি হয় একটি বস্তির। ১৮৮৭-তে বাড়ি তৈরি হয়, বাস করতে শুরু করেন অতুলকৃষ্ণ ঘােষ।১৮৯১ পর্যন্ত পাশের ৩১ নম্বরেও কাঁচা বস্তি ছিল। ঐ বছরে বাড়ি তৈরি হলে অতুলকৃষ্ণ ৩০ থেকে ৩১ নম্বরে সরে যান, তাঁর জায়গায় ৩০ নম্বরে আসেন অম্বিকাচরণ ঘােষ। অতুলকৃষ্ণ-অম্বিকাচরণ বােধহয় আত্মীয় ছিলেন,তাই এরকম ঠাঁইবদল হয়েছিল। উনিশ শতকের শেষ পর্যন্ত ঘােষেরা যথাস্থানে ছিলেন, কিন্তু ১৯০৭-এ দেখা যাচ্ছে যে বাড়ি দুটি নিয়ে রয়েছে ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল ও বাের্ডিং। ততদিনে বােধহয় রামচরণ মিত্র দুটি বাড়িই কিনে নিয়েছেন। তিরিশ নম্বর বাড়িটি যে নিজের সেজ ছেলে জ্ঞানেন্দ্রনাথকে দিয়েছিলেন রামচরণ, সেকথা আগেই বিবৃত হয়েছে। এখনও সে বাড়িতে জ্ঞানেন্দ্রনাথ মিত্রের পৌত্ররা বসবাস করছেন।একত্রিশ নম্বর বাড়িটি রামচরণ দিয়েছিলেন ছােট ছেলে ভূপেন্দ্রকুমার মিত্রকে। ভূপেন্দ্রকুমার বাড়িটি বিক্রি করে দেন, কয়েক হাত ঘুরে মালিকানা পৌছয় হাওড়া-শিবপুরের লৌহ-ব্যবসায়ী রাজকুমার পালের হাতে। তাঁর
স্ত্রীর কাছ থেকে দীর্ঘকালের ভাড়াটিয়া ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল’ বাড়িটি কিনে নেয়।ঝামাপুকুর জলাশয়ের উত্তর পাড়ে অবস্থিত বত্রিশ নম্বর বাড়ি যে ১৮২৫ ও ১৮৫৬-র মধ্যবর্তী সময়ে
নির্মিত হয়, তা মানচিত্রের সাক্ষ্য থেকে পরিষ্কার বােঝা যায়। হুগলি জেলার বলদবাঁধ গ্রাম থেকে প্রথম কলকাতায় আসেন মদনমােহন ঘােষ। অল্পবয়সে মদনমােহনের মৃত্যু হলে তার স্ত্রী সহমৃতা হন, কাজেই মদনমােহনের মৃত্যু
নিশ্চয়ই ১৮২৯-এর ‘সতী’ নিষিদ্ধকরণের আগের ঘটনা। সুতরাং মানচিত্রে যে বিশাল বাড়ি মাথা তুলেছে, তা নিশ্চয়ই মদনমােহনের পুত্ররা তৈরি করেছিলেন।মদনমােহনের মৃত্যুকালে তাঁর দুই পুত্র বৈদ্যনাথ ও তারকনাথ ছিলেন নাবালক। বৈদ্যনাথের উত্তরপুরুষদের‌ মধ্যে অনেকে যথেষ্ট কৃতী হয়েছিলেন। বৈদ্যনাথের পুত্র যদুনাথ (এল.এম.এস.) চিকিৎসক, সিদ্ধেশ্বর এ.জি.
– বেঙ্গলের পদস্থ কর্মী, পৌত্রদের মধ্যে ভূপেন্দ্রনাথ ডিস্ট্রিক্ট জজ, অক্ষয়কুমার ব্যারিস্টার, অবিনাশ আইনজীবী ছিলেন। ১৮৮৯ নাগাদ এ বাড়ি ছেড়ে তাঁরা চলে যান, তারকনাথের উত্তরপুরুসরা বৈদ্যনাথের বংশধরদের বর্তমান হদিস সম্পর্কে বিন্দুমাত্র অবগত নন।

Be the first to review “ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল ১৯০৪-২০০৪ শতবর্ষ:স্মারক গ্রন্থ”