Description
বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা গুলোর একটি উৎপত্তি ঘটে ভারতে। এখানেই ফে ওঠে অত্যন্ত উঁচুস্তরের উন্নত এক সংস্কৃতি যা এই দেশের পরবর্তী বিকাশের ক্ষেত্রে এবং সমগ্রভাবে গােটা প্রাচোর, মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ও দূর প্রাচ্যের বহু জাতির সংস্কৃতির অগ্রগতিতে বিপুল প্রভাব বিস্তার করে। প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার, ইত্যাদির ফলে এখন প্রমাণ পাওয়া গেছে যে মানবসমাজের একেবারে আদিতম কাল থেকেই ভারতে জনবসতি বর্তমান ছিল।এ-দেশের বহু অঞ্চল থেকেই প্রত্নপ্রস্তরযুগের নিম্নতর ভূ-স্তরের আমলে তৈরি পাথরের হাতিয়ার, ইত্যাদি পাওয়া গেছে। পরস্পর-নিরপেক্ষ ভাবে নিম্নতর প্রত্ন প্রস্তর যুগীয় সংস্কৃতির দুটি কেন্দ্র উদ্ভূ্ত হয়েছিল একদা: উত্তরে সোন নদীতীরবতী সংস্কৃতি (বর্তমান পাকিস্তানের সোন নদীর তীর-বরাবর) এবং দক্ষিণে দাক্ষিণাত্য-অঞ্চলে তথাকথিত মাদ্রাজি সংস্কৃতি। এই দুটি প্রত্নপ্রস্তরযুগীয় কেন্দ্রই মনুষ্যবাসের পক্ষে অধিকতর অনুকূুল নদী-উপত্যকায় অবস্থিত ছিল। এদের মধ্যে প্রথম আবিস্কৃত হয় ১৮৬৩ সালে মাদ্রাজ এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রটি। এ-কারণে দক্ষিণ ভারতে নিম্নতর প্রত্নপ্রস্তরযুগের বৈশিষ্টাসূচক কুঠার, ইত্যাদি যে-হাতিয়ার পাওয়া গেছে তাই-ই মাদ্রাজি কুঠার নামে পরিচিত হয়ে আসছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের নিম্নতর প্রত্নপ্রস্তরযুগীয় খননক্ষেত্রগুলিতে কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের হাতিয়ার পাওয়া গেছে, যেমন পাথরের নুড়ি কাটার বড়-বড় গুরুভার হাতিয়ার। এই হাতিয়ার ইংরেজি ‘চপার’ শব্দটি দিয়ে চিহ্নিত হয়ে আসছে। প্রত্নপ্রস্তর যুগের হাতিয়ার ইত্যাদি দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও, যেমন মধ্য ও পশ্চিম ভারতেও, অতঃপর আবিস্কৃত হয়েছে। দেখা গেছে, সে-সমস্ত জায়গায় সােন ও মাদ্রাজের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেন পরস্পর খাপে-খাপে জোড়া লেগে মিলেমিশে গেছে। নতুন গবেষণার ফলে দেখা গেছে যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মাদ্রাজি কুঠারেরই প্রাধান্য বর্তমান, আর যত উত্তর দিকে এগোচ্ছে আমরা, সােন-অঞ্চলীয় হাতিয়ারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ততই।
Be the first to review “ভারতবর্ষের ইতিহাস -কোকা আন্তোনভা, গ্রিগোরি বোনগার্দ- লেভিন, গ্রিগোরি কতোভস্কি”
You must be logged in to post a comment.