Description
তখন বিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদের শেষ দিক। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড:দীনেশ চন্দ্র সেন যখন তাঁর “বৃহৎ বঙ্গ” পুস্তক লিখছিলেন তখন হালিশহরের দক্ষিণ অংশে খাসবাটি অঞ্চলের বাসিন্দা গােপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য,
দীনেশচন্দ্রের নিকট বাংলা সাহিত্যে এম. এ. পড়ছিলেন। গােপেন্দ্রনাথ হালিশহরবাসী জানতে
পেরে দীনেশচন্দ্র রামপ্রসাদের প্রতিকৃতি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তার নিকট থেকে উপরােক্ত
ছবিখানি পান। এ-বিষয়ে ‘বৃহৎবঙ্গ’ পুস্তকে ড:দীনেশচন্দ্র লিখেছেন: “কবি রামপ্রসাদ সেন ও
তাঁহার পত্নীর যে ছবি দেওয়া হইয়াছে তাহা আমি হালিশহরবাসী শ্ৰীযুক্ত গােপেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য্য
এম. এ. মহাশয়ের নিকট পাইয়াছি। একখানি স্বর্ণখচিত সমুজ্জ্বল চণ্ডীমূর্তির দুইপার্শ্বে ভক্তিমান
ও ভক্তিমতীর ছবি দুইটি দেওয়া হইয়াছে। হিসাব করিয়া দেখা গিয়াছে এই ছবি যখন অঙ্কিত
হইয়াছিল তাহার অব্যবহিত পূৰ্ব্বে রামপ্রসাদ স্বর্গারােহণ করিয়াছিলেন। তখন হালিশহর
অঞ্চলটা রামপ্রসাদের স্মৃতিময়। যে পটুয়া ছবি আঁকিয়াছিল, তাহার বাড়ী হালিশহর কুমারপাড়া।
এই স্থানটি রামপ্রসাদের গৃহ ও ‘পঞ্চমুণ্ডী’ হইতে অর্ধ মাইল দূরে এক পাড়া বলিলেই হয়।
গােপেন্দ্র ভট্টাচার্য্যের বাড়ীও এক মাইলের মধ্যে এবং তাহারই পূৰ্বপুরুষ ছবি আঁকাইয়া ছিলেন। সেখানকার লােকের মুখে শুনিয়াছি উক্ত পার্শ্বচর ভক্তদ্বয়ের ছবি রামপ্রসাদ ও তার স্ত্রীর অনুরূপ। এখন যেমন কালীমূৰ্ত্তি আঁকিতে যাইয়া অনেক সময়ে পরমহংসদেবের ছবিও তৎপার্শ্বে আঁকা হয়, রামপ্রসাদের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে তাহার প্রতিবেশী পটুয়া যেভক্ত আঁকিতে যাইয়া রামপ্রসাদ ও তাহার পত্নীর ছবি আঁকিবে, তাহাও তেমনি স্বাভাবিক। রামপ্রসাদের পত্নী কালিকাদেবীর দর্শন পাইয়াছিলেন। একথা কবি স্বয়ং বলিয়াছেন। রামপ্রসাদকে যাঁহারা চক্ষে দেখিয়াছিলেন, জীবনী লেখক অতুলবাবু তাহাদের কথা উল্লেখ করিয়াছেন। “রামপ্রসাদের
বাবরি চুল ছিল। উজ্জ্বল গৌরবর্ণ ছিলেন। গলায় স্ফটিক মিশানাে রুদ্রাক্ষমালা ছিল। অত্যন্ত
সুপুরুষ ছিলেন। (অতুল মুখােপাধ্যায় কৃত রামপ্রসাদের জীবন’, ২৫৪ পূ.)। দাড়ি ছিলনা
বলিয়া কথিত আছে।
Be the first to review “রামপ্রসাদ স্মারক- জীবনকথা:লীলা কীর্তন: পদ সংগ্রহ -সম্পাদনা:সমীরণ দাশগুপ্ত রতন কুমার ঘোষ”
You must be logged in to post a comment.