Description
আগুনের উপর হাঁটা,কি প্রাচ্যে, কি পাশ্চাত্যে এই চমকপদ ব্যাপারটি দীর্ঘকাল ধরে ভারতীয় যােগী-ঋষিদের অত্যদ্ভুত অলৌকিক ক্ষমতার প্রকাশ বলে প্রচারিত হয়েছে। চড়ক বা অন্যান্য নানা ধর্মীয় মেলায় ‘ ঠাকুরের আশীর্বাদে অনেক ভক্ত বা সেবাইতরা এ খেলা দেখায় এবং ঐশ্বরিক
মাহাত্ম্য প্রচার করে। অনেকে আবার এ ধরনের খেলা দেখিয়ে দু’পয়সা উপার্জনও করে। এদের মধ্যে ভারতের খােদাবক্স ও আহমেদ হােসেন নামে দু’জন একসময় যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিল। ১৯৩৫ ও ১৯৩৭ সালে লণ্ডনের Uuniversity of London Council for
Psychical Investigations নামক সংস্থা এঁদের উপর গবেষণা চালায়।ভারতের হায়দ্রাবাদ গান্ধী মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ডাঃ শংকর রাও সহ আরো অনেকেই এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করেন।অবশ্য শুধু ভারতবর্ষে নয় ব্যাপারটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ধর্মানুষ্ঠানেও
করা হয়। ১৩.৩.৮০-এর স্টেটসম্যানে জাপানের
টোকিও শহরের কাছাকাছি এক বৌদ্ধমন্দির প্রাঙ্গনে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা কিভাবে আগুনের উপর হেঁটেছিলেন তার বর্ণনা বেরিয়েছিল।ভক্তদের
মতে তারা কোন যন্ত্রণা অনুভব করেন না, কারণ তারা জাগতিক চিন্তা থেকে মুক্ত থাকেন।
কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেছে অনুশীলনের পর দ্রুত গতিতে হেঁটে যাওয়ার ফলে পায়ের পাতাটি মাত্র ০. ৩-০.৫ সেকেণ্ড আগুনের সংস্পর্শে আসে। এত কম সময় আগুনের সংস্পর্শে আসার ফলে ফোস্কা পড়ার কথা নয়। তাপমাত্রাও এমন কিছু বাড়ে না। থার্মোকাপল যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, পায়ের পাতার তাপমাত্রা বাড়ে মাত্র ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। অথচ ফোস্কা পড়ার জন্য চামড়ার নীচের অংশ ও কলা (tissue) -র তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বিশেষ (critical)মাত্রায় পৌঁছানো দরকার। পেীেে। হুকোর তামাকে আগুন দেওয়ার সময়, বা রান্নাঘরে অনেক মহিলাও, জ্বলন্ত কাঠকয়লার টুকরাে হাতের চেটোয় নাচিয়ে নাচিয়ে তুলে নেন-ফোস্কা পড়ে না। আর হাতের বা পায়ের চেটোর শক্ত চামড়াও এ ব্যাপারে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। যারা বহুবার আগুনের ওপর হাঁটে তাদের পায়ের পাতা এমনিতেই অনেক মােটা হয়ে যায়। এছাড়া ধর্মীয় মেলায় ভক্তরা স্নান করে পুজো দিয়ে আগুনে হাঁটে।এ ক্ষেত্রে পায়ের তলায় লেগে থাকা জলে ভেজা কাদামাটি,পরনের ভেজা কাপড় থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়া জল, উপবাসের ফলে শরীরের হালকা ওজন ইত্যাদিও অতিরিক্ত সুবিধা এনে দেয়।
Be the first to review “শরীর ঘিরে সংস্কার -ভবানীপ্রসাদ সাহু”
You must be logged in to post a comment.